কাকে রেখে কার কথা বলব সবার খেলাই ভালো লাগে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সাক্ষাৎকার

কাকে রেখে কার কথা বলব সবার খেলাই ভালো লাগে

কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। স্টেজ শো, টিভি প্রোগ্রাম, নতুন গান- সব মাধ্যমেই বেড়েছে তার ব্যস্ততা। কথা হয় তার সঙ্গে।

শুরু হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। ক্রিকেটের কতটা ভক্ত আপনি?

ক্রিকেট খেলার আমি ভীষণ ভক্ত। গানে যেমন এসেছি আব্বুর ভালোবাসার কারণে, ঠিক আব্বুর কারণেই ক্রিকেটের ভক্ত হয়ে গেছি।

বাংলাদেশের কার খেলা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে?

কাকে রেখে কার কথা বলব! সবার খেলাই ভালো লাগে। সবাই সবার জায়গা থেকে ভালো খেলবে, এই প্রত্যাশা করি।

টাইগারদের নিয়ে কতটা প্রত্যাশা?

বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবে, জিততে হবেই।

অন্য কোন দেশের খেলার ভক্ত আপনি?

শের দেশ ভারতের খেলা ভালো লাগে। অস্ট্রেলিয়ার খেলাও ভালো লাগত। যেহেতু নিজের দেশ খেলছে, তাই অন্য দেশের প্রতি নজর দেওয়ার দরকারই পড়ে না। কারণ আমার দেশেই আছে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়।

এবার যেন সব উৎসব একসঙ্গে হচ্ছে। ঈদও চলে এলো। ঈদ কোথায় করবেন?

ঢাকাতেই ঈদ করার ইচ্ছা। কারণ ঈদের মধ্যে প্রোগ্রাম থাকে। শো থাকে। গ্রামে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও যেতে পারি না।

ছেলেবেলার ঈদের কথা মনে পড়ে নিশ্চয়ই?

মনে তো পড়ে। ছোটবেলার ঈদ ছিল অনেক স্পেশাল। অনেক মজা হতো। হইচই করতাম। আমি বড় হয়েছি ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। ঈদ এলে সবার বাসায় বাসায় দাওয়াত খাওয়া। জামা লুকানো। এখন তো আর এ রকম হয় না। ঈদের জামা লুকানোর জন্য আম্মুর সঙ্গে ঝগড়াও হয়েছে। আম্মু জামা কিনে আন্টিদের দেখাত বলে আম্মুর সঙ্গে আমার ঝগড়া হতো। আমার কাছে মনে হতো, ঈদের জামা দেখে ফেললেই ঈদ পুরনো হয়ে যাবে। সো ওটা ছিল মজার স্মৃতি। ঘুম থেকে উঠে সকালবেলা রেডি হয়ে কোয়ার্টারের এ মাথা থেকে শেষ মাথা পর্যন্ত যেতাম। কমপক্ষে ২০-২৫টি বাসায় নতুন জামা পরে সবাই দলবেঁধে ঘুরে বেড়াতাম। এসব স্মৃতি সত্যি বলতে ভোলা যায় না।

আর এখনকার ঈদ?

ঈদের পুরো দিনটাই ঘুমাই। কারণ রাতে টিভিতে লাইভ থাকে। এবারের লাইভগুলো অবশ্য ঈদের ষষ্ঠ দিন রাতে (একুশে টিভি) ও সপ্তম দিন (নাগরিক টিভি) নিয়েছি ইচ্ছে করে। যাতে ঈদের দিনটা একটু ফ্রি থাকতে পারি। বাইরে বের হওয়ার কোনো প্ল্যান নেই। শো যদি থাকে তা হলে শো করা হবে।

ঈদের অনেক টিভি প্রোগ্রাম করা হয়েছে নিশ্চয়ই?

প্রায় সব টিভিতেই প্রোগ্রাম আছে। সবই গানের প্রোগ্রাম।

এত প্রোগ্রামের মাঝে আলাদা করে কোনো প্রোগ্রাম চোখে পড়েছে? যেটি আপনার চোখে ভিন্ন মনে হয়েছে?

এনটিভির ‘একের ভেতর দুই’ প্রোগ্রামটি ডিফারেন্ট। এখানে যারা গান ও উপস্থাপনা করেন তাদের নিয়ে প্রোগ্রামটি সাজানো হয়েছে। এ ছাড়া চ্যানেল আইয়ের একটি সুন্দর প্রোগ্রাম করেছি। যাদের আমরা হারিয়েছি, সেখানে তাদের গান গাইব।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করলেন ‘এক বৃষ্টিতে’। এর সাড়া কেমন পাচ্ছেন?

চ্যানেলটির অনেক আগে থেকেই কাজ শুরু করেছিলাম। কনটেন্ট কম তো, তাই নতুন গান প্রকাশের মাধ্যমে চ্যানেলটি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি। গত ১০ বছর অনেক গানই প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানে। এবার নিজের চ্যানেলের জন্য নতুন কনটেন্ট দেওয়া উচিত। এ চিন্তা থেকেই গান প্রকাশ করছি। ‘এক বৃষ্টি’ গানটি সবাই পছন্দ করেছে।

হাবিব ওয়াহিদের সুরেও একটি গান প্রকাশ করলেন। ওনার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

এখনকার সময়ে আমার গানের মধ্যে ‘এক যমুনা’ সবচেয়ে ভালো গান। হাবিব ভাইয়ের সঙ্গে এটাই আমার প্রথম গান। তাই উচ্ছ্বাসও একটু বেশি ছিল। ওনার সঙ্গে শো করেছি একসঙ্গে, জিঙ্গেলও করা হয়েছে। তিনি একদম পরিকল্পনা করে কাজ করেন। প্রথমে গানটা পাঠালেন। শুনলাম। আমরা একদিন এমনি-এমনি গাইলাম, বলতে পারেন প্র্যাকটিস করলাম। এর পর আরেক দিন ফাইনালি ভয়েস দিলাম। গানের প্রতি এত যত্মশীল হওয়ার কারণেই হাবিব ভাইয়ের গানগুলো ডিফারেন্ট হয়। শ্রোতারা ভালোভাবে নেন।

দুটি মন আজ নেই দুজনার- আপনার কণ্ঠের (মূল কণ্ঠশিল্পী চিত্রা সিং) এ গানটি অনেকের প্রিয় তালিকায় উঠে এসেছে।

সত্যিই। এর জন্য সব ক্রেডিট পার্থদার। আমাকে যেভাবে গেয়ে নিয়েছেন দাদা, এভাবে আমি নরমালি গাই না। প্রতিটি বিষয় ধরা, প্রতিটি ওয়ার্ড ধরা, প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে আমি টেনে গাইব, বেশি, নাকি কম, এতকিছু চিন্তা করে আমি ভয়েস দিইনি আগে। আমি আমার মতো করে গাইতাম। যতটুকু আমার সাধ্য ইফোর্ট দিয়ে করতাম। বাট অনেক জিনিস আছে, যেগুলো উনি আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন এ জন্য গানটা এতটা ভালো হয়েছে। ইভেনকি স্টেজ শো, ওপেন এয়ার কনসার্টে রিকোয়েস্ট আসে গাওয়ার।

তার মানে গান ভালো হলে শ্রোতারা ভালোভাবেই নেয়।

অনেক ভালো ভালো গান আছে আমাদের। এটা একটা লাকেরও ব্যাপার। কখন কোন গান যে মানুষ শুনছে, এটা বোঝা বড়ই মুশকিল। এই যেমন সিলন মিউজিক যেটা করল, প্রমোশন, পৃষ্ঠপোষকতা। তারা সব গানই পরিকল্পনা করে সমানভাবে দেখছে। এখানে যারাই গানগুলোয় কণ্ঠ দিয়েছে, তারা সবাই ফিডব্যাক পেয়েছে।

আর কোনো গান প্রকাশ হচ্ছে শিগগির?

রবিউল ইসলাম জীবনের কথায় কলকাতার আকাশ সেনের সুর ও সাজিদ সরকারের সংগীতে নতুন একটি গান প্রকাশ করব ঈদের পর।

আপনার উপস্থাপনাতেও কিন্তু প্রশংসা পাচ্ছিলাম। দীর্ঘদিন উপস্থাপনায় নেই কেন?

লিজা তোমার গান অনেক পছন্দ করি। তোমার উপস্থাপনাও ভালো লাগে- এ কথাগুলোর কারণেই আমি উপস্থাপনা থেকে দূরে আছি। অভিযোগ পাচ্ছিলাম সব জায়গা থেকে, লিজাকে গানে দেখি না কেন? রেগুলোর প্রোগ্রাম থাকত। সপ্তাহে পাঁচ দিনই উপস্থাপনা থাকত। সেই অভিযোগের কারণে মনে হলো গানকে বেশি সময় দেওয়া উচিত। আমি যে কারণে লিজা, সেটাকেই প্রায়োরিটি দেওয়া উচিত। কিন্তু উপস্থাপনা আমার ভালো লাগার জায়গা। ষ ছবি : আল আমিন লিয়ন

Comment here