কারাগারে বিএনপি নেতাকর্মীরা ধুকেধুকে মরছে: রিজভী - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

কারাগারে বিএনপি নেতাকর্মীরা ধুকেধুকে মরছে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সারাদেশে কারাগারগুলোতে উপচে পড়ছে বিএনপির নেতাকর্মী। কারাগারে যাওয়ার পরে অসুস্থ হচ্ছে এবং ধুকেধুকে সেখানে মরছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে অধিকাংশের সেই পরিস্থিতি এবং সেই পরিণতি।’

আজ শুক্রবার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নাটোরে কারাগারে বিনাচিকিৎসায় যুবদল নেতা এ কে আজাদ সোহেলের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগের পাশাপাশি বিষয়টিকে ‘খুবই মর্মান্তিক’ বলে মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় আজাদ সোহেলকে মিথ্যা মামলায় আটক করে ডিবি পুলিশ। এরপর নাটোর কারাগারে পাঠায় তাকে। ৩০ নভেম্বর আদালত তাকে জামিন দেয়। পরে কারাগারে নিয়ে আসতে গেলে তার পরিবারকে কারা কর্তৃপক্ষ জানায় এ কে আজাদ অসুস্থ থাকায় তাকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘পরিবারের সদস্যরা রাজশাহী মেডিকেলে গিয়ে দেখেন বারান্দায় সোহেলের লাশ পড়ে আছে। সেখানে বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলাতেই তার মৃত্যু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শুধু বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীরা নয়, সরকারের নির্যাতন-পীড়নের শিকার হচ্ছেন মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক এবং প্রতিবাদমুখর লোকজনরা। বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং সমালোচকদের সরকার গণ দমন-পীড়নের মাধ্যমে এদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে যাচ্ছে। সারাদেশে এরকম একটা ভয়-ভীতির ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। আর আওয়ামী লীগের লোকও যদি প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপি বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন, সেও নিস্তার পায় না।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘‘বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে নির্বাচন অবৈধ হবে কেন?’’ আমার প্রশ্ন বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য দল এবং বড় রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়া আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচন করবে, সেই নির্বাচন বৈধ হয় কী করে?ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জিতে আসার দিন শেষ হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যে তথাকথিত নির্বাচনের পাঁয়তারা চলছে তা ভোটার ও জনগণের জন্য নয়। এটি সরকারের আরেকটি কদর্য রাজ্যাভিষেকের উৎসব হতে চলেছে। সবার প্রত্যাশার একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবর্তে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আরেকটি ভোট ডাকাতির উৎসব আয়োজনের পথ বেছে নিয়েছে। ’

রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) ও তার দলের লোকজন ভোট ডাকাতির জন্য নির্বাচনী ট্রেনে চড়তে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বিভিন্ন দলের লোকদের ভাড়া করেছে। এ ট্রেনকে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেওয়া হবে না। ফ্যাসিবাদী নির্বাচনী মডেল বন্ধ করুন এবং জনগণের দাবি মেনে নিন। অন্যথায় পতন অনিবার্য’।

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই জানে যে, সরকার আরেকটি প্রহসনমূলক নির্বাচন করতে যাচ্ছে। এই কারণে জাতিসংঘ ঘোষণা করেছে যে তারা কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। অন্য সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রও আগ্রহ হারিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করেছে। বিএনপি জোটের কয়েকটি দলকে প্রহসনমূলক নির্বাচনে অংশ নিতে প্রলুব্ধ করেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, মামলা, আসামি ও আহতদের তালিকা তুলে ধরেন রিজভী। তিনি জানান, এসময়ে গ্রেপ্তার হয়েছে ২১৫ জন নেতাকর্মী, আহত হয়েছে ১০ জন এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে ৭টি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ৮৭৫ জন নেতাকর্মীকে।

Comment here