ক্ষমতায় থাকার আরেকটি নীলনকশা সার্চ কমিটি - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

ক্ষমতায় থাকার আরেকটি নীলনকশা সার্চ কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে ঘোষিত সার্চ কমিটি সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার আরেকটি নীলনকশা। এই সার্চ কমিটির কোনো মূল্যই নেই। গতকাল শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর সার্চ কমিটি প্রসঙ্গে আমাদের সময়ের কাছে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।

এদিকে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এ কারণে সার্চ কমিটি গঠনসংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জন করে দলটি। এরই মধ্যে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে এক দফা আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা জানান, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে ঘোষিত সার্চ কমিটির কাছে বিএনপি কারও নাম প্রস্তাব করবে না।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নতুন করে কিছু বলার নেই। আমরা মনে করি, সার্চ কমিটি, নির্বাচন কমিশন- সবই সরকারের অধীন। এগুলো নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। এটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নয়, জনগণের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। কারণ, এটা প্রমাণিত যে এই সরকারের অধীনে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি, হবেও না। তাই এই মুহূর্তে অনুসন্ধান কমিটি কিংবা নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই।’

সার্চ কমিটি গঠন বিষয়ে অভিন্ন বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

আমীর খসরু বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির ঘোষণা আওয়ামী লীগ সরকারের ভোট চুরি প্রকল্পের অংশ। এদের অধীনে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই তারা কী করল তা নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমাদের ভাবনায় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। সেই সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন কিভাবে গঠিত হবে।’

গতকাল গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘সার্চ কমিটি নিয়ে আমাদের আগ্রহ নেই। আমাদের দলের বক্তব্য পরিষ্কার। আমরা মনে করি, এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেটা সার্চ কমিটি হোক আর যেই হোক। এ সরকার থাকলে আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না। সুতরাং এ ব্যাপারে আমরা কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

সার্চ কমিটি কেমন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কমিটিতে কে থাকল আর কে থাকল না, সেটা বিষয় নয়। বিএনপি নির্বাচন কমিশন নিয়ে আগ্রহী নয়। আমাদের কথা হলো, এমন একটি সরকার ও প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন হতে হবে, যারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে। যেটা ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে হয়েছে। সে রকম একটা সরকার দরকার। তা ছাড়া নির্বাচন তো কমিশন করে না। নির্বাচন করে সরকার। তাই এ সরকার থাকলে নির্বাচন কমিশন দিয়ে কী হবে?’

এক প্রশ্নের জবাবে ইকবাল হাসান বলেন, ‘এ সরকার তো অনেক কিছুই বলে। এর আগেও বলেছিল এখন যারা আছে তারা নিরপেক্ষ লোক। নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। তার পর আমরা যে কমিশন পেয়েছিলাম, সেটা বোধহয় বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্যতম কমিশন ছিল।’

যারা সার্চ কমিটিতে এসেছেন তাদের নিরপেক্ষতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের তো অন্য গ্রহ থেকে আনা হয়নি। এ গ্রহ থেকেই এনেছে। বাংলাদেশ খুব ছোট জায়গা, এখানে সব সেক্টরে সবাই সবার খবর জানে। সুতরাং আমাকে জিজ্ঞাসা না করে আপনারা খোঁজ নেন।’

দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার : কল্যাণ পার্টি

রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেওয়া ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিও সার্চ কমিটি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বিবৃতিতে বলেন, সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে সরকার তাদের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। এটা দুঃখজনক ও হতাশাজনক।

 

Comment here