দেশে গণতন্ত্র হত্যার প্রধান নায়ক খায়রুল হক, দাবি ফখরুলের - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

দেশে গণতন্ত্র হত্যার প্রধান নায়ক খায়রুল হক, দাবি ফখরুলের

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি-এই দিনে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক তালিকা থেকে বাদ দিতে একটি পাতানো ও প্রহসনের নির্বাচন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে দেশে গণতন্ত্র হত্যার প্রধান নায়ক বলে আখ্যা দেন তিনি।

আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির অষ্টম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সারা দেশে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। প্রতিবছর এদিনকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।

ফখরুল বলেন, ‘আজকের এই দিনটি আমরা পালন করতে চাই। কারণ এই দিনে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে বিরাজনীতিকরণে এবং পুরোপুরিভাবে গণতান্ত্রিক তালিকা থেকে বাদ দিতে একটি পাতানো ও প্রহসনের নির্বাচন করা হয়েছিল। ’

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ যখন দেখে জনগণ তাদের ভোট দেবে না, তখন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার উদ্যোগ নেয়। আর এতে প্রধান নায়কের ভূমিকায় ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তাই ভবিষ্যতে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হলে বিচারপতি খায়রুল হকের বিচার করা হবে।’

রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার আবারও দাবি জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) জেনে শুনেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে একটা হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। তারা দেশনেত্রীকে হত্যা করতে চায়। আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার অভাবে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে তাদের প্রত্যেককেই হত্যার আসামি করে বিচার করা হবে।’

ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘আজকে একথা প্রমাণিত হয়েছে যে, এই সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চায়, তারা এখন অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের মানুষ যখন দল মতনির্বিশেষে চাচ্ছে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হোক, তখনই শেখ হাসিনার সরকার এবং শেখ হাসিনা তারা অত্যন্ত ভয়াবহভাবে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে (খালেদা জিয়া) বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দিচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে দেশনেত্রী অত্যন্ত জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, তখন চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য যাওয়ার জন্য বলছেন, তখন বিদেশে যাওয়ার জন্য কোনো ব্যবস্থাই তারা করছে না। উপরন্তু তারা আইনের কথা বলে তাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কোনো আইন মানুষের চেয়ে বড় নয়। আজকে দেশের জন্য তার যে অবদান, এদেশের প্রতি, এদেশের গণতন্ত্রের প্রতি, এদেশের উন্নয়নের জন্য তার অবদান সেই অবদানকে স্বীকার করে তাকে এই মুহুর্তে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো দরকার।’

বসুন্ধরার এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের যে চিকিৎসকরা আছেন, তারা অত্যন্ত আন্তরিকভাবে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন, তারা তাদের সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছেন দেশনেত্রীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। গত পরশুও তার রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমি গতকাল ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বলেছেন, আমাদের যে চিকিৎসার সুবিধা আছে, যে কারিগরি সাপোর্ট আছে সেই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা এখন যা করছি তা অত্যন্ত সাময়িক। যেকোনো সময়েই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবনের আশঙ্কা মারাত্মক হয়ে দেখা দিতে পারে। ’ এজন্য খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে চলমান আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে ‘দুর্বার আন্দোলন’ গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব।

মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মীর সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, নাজিম উদ্দিন আলম,শামীমুর রহমান শামীম, কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, যুবদলের মোর্তাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহানগর বিএনপির নবী উল্লাহ নবী, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ওলামা দলের নজরুল ইসলাম তালুকদার, ছাত্রদলের ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ মহানগর ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

 

Comment here