খাদ্য নিরাপত্তায় প্রধানমন্ত্রীর তিন প্রস্তাব - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

খাদ্য নিরাপত্তায় প্রধানমন্ত্রীর তিন প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক : এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তায় তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এই অঞ্চলের কৃষি খাতে উন্নতির জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের পরামর্শ দেন।

আজ বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মন্ত্রী পর্যায়ের ৩৬তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৩০ কোটি ৫৭ লাখ মানুষ এখনো ক্ষুধার কষ্ট পাচ্ছে। আমরা সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে তাদের জন্য সহজেই খাবারের ব্যবস্থা করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘জিডিপিতে অবদান কমলেও কৃষিতেই বাংলাদেশের কর্মসংস্থান বেশি। আঞ্চলিক খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনটি পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকরা অবহেলিত ছিল, তারা ব্যাংক ঋণও সহজে পেত না। সরকারের উদ্যোগের কারণে এ পরিস্থিতি পরিবর্তন হচ্ছে। কৃষকরা এখন সরাসরি ঋণ পাচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির শুরুতে অন্য সব খাতের মতো কৃষিও বাধাগ্রস্ত হয়, যা উৎপাদক এবং ভোক্তাকে প্রভাবিত করেছিল। তবে সরকারের সময়মতো এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এ খাতে দ্রুত পুনরুদ্ধারে সহযোগিতা করেছে। মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব।’

প্রধানমন্ত্রী কৃষিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘চাল, সবজি, ফল, মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ উৎপাদনে গত ১৩ বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ। বছরে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের মধ্য দিয়ে ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ।

‘বিশ্বে বাংলাদেশ পাট ও মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং চা উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম।’

তিনি বলেন, ‘এ সাফল্যের পরও আমরা মনে করি প্রকৃত অর্থে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে। কারণ এই খাতগুলো প্রকৃতি এবং জলবায়ু সম্পর্কিত অস্বাভাবিকতার কারণে আঘাতের ঝুঁকিতে রয়েছে।’

কৃষির উন্নয়ন ও কৃষকদের কল্যাণে জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৮, জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি ২০২০ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ বাস্তবায়নের উদ্যোগ ও নানা পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানান সরকারপ্রধান।

এফএও’র সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন টেকসই কৃষির জন্য হুমকি। করোনা মহামারিতে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে কৃষি অর্থনীতি সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য টেকসই কৃষিতে বড় চ্যালেঞ্জ জলবায়ু সংকট মোকাবিলা। আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার জন্য বিশেষ তহবিল প্রয়োজন।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ ও ‘ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ গ্রহণ করার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞানীরা বন্যা, খরাপ্রতিরোধী এবং লবণাক্ততা-সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছেন, যা সেই বিরূপ পরিবেশে জন্মে।’

 

Comment here