জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে যা বললেন রিজভী - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে যা বললেন রিজভী

বিএনপির পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিলে পুলিশের হামলা ও গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে এই সংবাদ সম্মেলন করে তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ বিএনপির পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিলে হামলা, নিপীড়ন ও নির্যাতন চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অবৈধ সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশকে লেলিয়ে দিয়েছে। আজ উত্তরায় কোনো উস্কানি ছাড়াই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে তাকে ধাক্কা দিয়ে জিপে উঠিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। আমরা সংবাদমাধ্যমে দেখলাম, ড. মঈন খান পুলিশের উদ্দেশে বারবার বলছিলেন তার অপরাধ কী? কিন্তু পুলিশ তার কথায় কর্ণপাত না করে মঈন খানকে ধাক্কা দিয়ে জিপে উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং নাজেহাল করে। পরে তাকে ছেড়ে দিলেও তার সঙ্গে আটক হওয়া অন্য নেতাকর্মীদের এখনো ছেড়ে দেওয়া হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ বিএনপির কালো পতাকা মিছিল থেকে বিনা কারণে বিএনপি নির্বাহী কমিটির সহপ্রচার সম্পাদক ও সদ্য কারামুক্ত নেতা শামীমুর রহমান শামীমকে বাগেরহাটের রামপাল থেকে এবং জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদসহ মহিলা দলের ৪ নেত্রীকে রাজধানীর উত্তরা থেকে অন্যায়ভাবে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। সুলতানা আহমেদসহ মহিলা দলের নেত্রীদেরকে এখনো ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে তাদের পরিবার-পরিজন গভীর উদ্বেগ রয়েছেন। কিছুদিন আগে সুলতানা আহমেদের হার্টে রিং বসানো হয়েছে, তিনি গুরুতর অসুস্থ। অথচ তাকে এখনো ছেড়ে না দেওয়া চরম অমানবিক। আমি অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানাই।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‘বিএনপি কালো পতাকা মিছিলের ডাক দিয়েছে, আসলে বিএনপির উচিৎ দলীয় অফিসকে কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে ফেলা।” আজ এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‘বিশ্বের কোথাও পূর্ণ গণতন্ত্র নেই। তিনি আরও বলেছেন,‘‘বিএনপি বলে যে, বিএনপির ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে জেলে রাখা হয়েছে, কিন্তু বিএনপির দেওয়া এই তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।” ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বলতে চাই, জোর করে বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন করে বন্দুকের নলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের মাধ্যমে তিনি এখন আরও বেসামাল কথাবার্তা বলতে শুরু করেছেন। নিজ দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্যেই দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর কাছে ওবায়দুল কাদেরের মিথ্যাচার উন্মোচিত হয়ে গেছে।’

কারাবন্দী বিএনপি নেতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ এখনো ২০ হাজারের বেশি নেতাকর্মী কারাগারে আছেন। দেশজুড়ে এখনো বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার চলমান। বিশ্বের কোথাও পূর্ণ গণতন্ত্র নেই বলে ওবায়দুল কাদের সাহেব কি বোঝাতে চেয়েছেন? তিনি চাপাবাজি করে স্বৈরতন্ত্র ও বাকশালকে গণতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন না। অদ্ভুত সরকার ও অদ্ভুত সংসদকে জায়েজ করতে পারবেন না। বাংলাদেশের জনগণ তাদেরকে শুধু প্রত্যাখ্যানই করেনি, লালকার্ড দেখিয়ে দিয়েছে।’

Comment here