জাপান টোব্যাকোর টাকা মালয়েশিয়ায় পাঠাতে চায় আকিজ গ্রুপ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
আন্তর্জাতিক

জাপান টোব্যাকোর টাকা মালয়েশিয়ায় পাঠাতে চায় আকিজ গ্রুপ

আবু আলী : বিদেশি বিনিয়োগ নীতিমালা থেকে ছাড়ের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় আকিজ গ্রুপ সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে ৩২ মিলিয়ন ডলার পাঠাতে চায়। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিরোধিতা করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, আকিজ গ্রুপ যেহেতু স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের ঋণ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। খবর অর্থ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রের।

আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসকে বশির উদ্দিন সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক এক্সচেঞ্জ বিভাগকে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে জাপান টোব্যাকো ইনক (জেটি) থেকে প্রাপ্ত তহবিল মালয়েশিয়ার আকিজ রিসোর্সেস এসডিএন বিএইচডিকে কোম্পানির ঋণ হিসেবে ব্যবহারের জন্য অনুমতি চেয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম একটি চিঠিতে জানান, দেশের বৈদেশিক বিনিয়োগ নীতির আওতায় বিদেশি জমিতে বাংলাদেশ বেসরকারি সংস্থাকে ইকুইটি দেওয়ার পরিবর্তে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ থেকে বেসরকারি সংস্থাকে ঋণ দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে আকিজ গ্রুপের মালয়েশিয়ায় তহবিল জমা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগ নীতিমালায় ছাড় দিতে সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। এ বিষয়ে তিনি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে চিঠিও পাঠিয়েছেন। একই চিঠি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদারের কাছেও পাঠিয়েছেন।

চিঠিতে মালয়েশিয়ায় সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য আকিজ গ্রুপের সিস্টার কোম্পানি থেকে জাপান টোব্যাকো কোম্পানির কাছে বিক্রি করা অর্থ থেকে ঋণ দেওয়ার আবেদন নিষ্পত্তির বিষয় উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। সেখানে আরও বলা হয়, আকিজ জুট মিলস লিমিটেড বাংলাদেশ মালয়েশিয়ায় আকিজ রিসোর্সেস এসডিএন বিএইচডি নামে একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছে। মালয়েশিয়ান সাবসিডিয়ারি কোম্পানি পার্টিকেল বোর্ড তৈরি করে।

আকিজ সিগারেট কোম্পানি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারের জাপান টোব্যাকোর কাছে বিক্রি করে। বাংলাদেশে ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে ১৯৫ মিলিয়ন ডলার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে জমা রেখেছে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের অন্তর্ভুক্ত নয়। বিদেশি লেনদেনের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। বৈদেশিক মুদ্রা অলস পড়ে আছে। এ অলস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কোনো লাভ নেই, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেনি। আকিজ গ্রুপ এ জমা অর্থ থেকে মালয়েশিয়ায় ৩২ মিলিয়ন ডলার পাঠাতে চায়। তিন বছর আগে আকিজ গ্রুপ মালয়েশিয়ায় কোম্পানি কেনার জন্য বাংলাদেশ থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার নেওয়ার অনুমতি পায়, যা মোট দামের তুলনায় ৪৮ মিলিয়ন ডলার ঘাটতি ছিল।

তারা জার্মানির ডিইজি-কেএফডব্লিউ থেকে ২৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার এবং এসবিসি মালয়েশিয়া থেকে ১৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে কোম্পানি ক্রয় করে। পরবর্তী সময়ে আকিজ গ্রুপ জাপান টোব্যাকোর কাছে কোম্পানি বিক্রি থেকে ৩২ মিলিয়ন ডলার ঋণ হিসেবে মালয়েশিয়ায় পাঠাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তরফ থেকে জানানো হয়, ইকুইটি হিসেবে নেওয়ার রীতি আছে, ঋণ হিসেবে নেই। এ জন্য তাদের আবেদন গ্রহণ করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে জার্মানির ডিইজি-কেএফডব্লিউ এবং এসবিসি মালয়েশিয়ার কাছে ৩২ মিলিয়ন ডলার বকেয়া হিসেবে আছে।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা চিঠিতে উল্লেখ করেন, মালয়েশিয়ার সাবসিডিয়ারি কোম্পানির সাথে আলোচনা করে জানা যায়, কোম্পানি ওই ঋণ মূল ও সুদসহ পরিশোধ করছে। বাংলাদেশের আকিজ জুট মিলস থেকে ওই ঋণ ও সুদ বাংলাদেশে ফিরে আসবে।

Comment here