ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ফাঁকা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ফাঁকা

কাজল আর্য,টাঙ্গাইল : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক। উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহসহ দেশের কমপক্ষে ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে এই মহাসড়ক দিয়ে। ঈদসহ যেকোনো উৎসবের ছুটিতে মাহসড়কে যানজট এবং ভোগান্তি স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এবার একেবারে উল্টো চিত্র।

আগামীকাল সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতর। কিন্তু করোনার কারণে মানুষের মধ্যে নেই ঈদের সেই আনন্দ। অধিকাংশ গণপরিবহন বন্ধ। তবুও করোনার ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন উপায়ে মানুষ বাড়ি যাচ্ছেন। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।

আজ রোববার দেখা যায়, মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশের ৬৫ কিলোমিটার প্রায়ই ফাঁকা। নেই যানবাহনের চাপ। বাস না থাকায় প্রাইভেটকার, হাইস ও মোটরসাইকেলে মানুষ বাড়ি যাচ্ছেন। আবার ছোট ছোট পিকআপভ্যানের মধ্যে গাদাগাদি করে অনেকে ছুটছেন গন্তব্যে। এদিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান ছাড়াও হেঁটে আঞ্চলিক সড়কে মানুষ যাতায়াত করছেন।

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার মহাসড়কের টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড। ঈদের মধ্যে এই এলাকায় যানজটে আটকে চরম ভোগান্তির শিকার হন। গতকাল ও আজ সরেজমিনে দেখা যায়, স্বাভাবিকের চেয়েও ফাঁকা রয়েছে মহাসড়ক। যানবাহন না পেয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছেন মানুষ। তবে মোটরসাইকেলে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

বগুড়া যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা রাজিবুল হক নামের এক যাত্রী বলেন, ‘চন্দ্রা থেকে পিকআপে এলেঙ্গা পর্যন্ত এসেছি। এখন কিভাবে যাবো, তার জন্য দাঁড়িয়ে আছি।’

বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আইয়ুবুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘মহাসড়ক ফাঁকা। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী যান চলাচল করছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষ প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলযোগে মানুষ যাচ্ছেন।’

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কামাল হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, ‘মহাসড়কে চেকপোস্ট ও মোবাইল টিম কাজ করছে, যাতে পণ্যবাহী যানে মানুষ যাতায়াত করতে না পারে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষ ছোট ছোট যানবাহনে বাড়ি ফিরছেন।’

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বিবিএর বঙ্গবন্ধু সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা দৈনিক মুক্ত আওয়াজকে বলেন, ‘গতবছর ঈদের দুই দিন আগে সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। এতে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা টোল আদায় হয়, যা যান পারাপার ও টোল আদায়ে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে। কিন্তু এবার ঈদে অর্ধেকে নেমে এসছে। গতকাল শনিবার ১৭ হাজার ৫১০টি যান পারাপার এবং ১ কোটি ৪ লাখ টাকা টোল আদায় হয়েছে। যানবাহনের মধ্যে অধিকাংশই ট্রাক।’

করোনার মধ্যে গাদাগাদি করে বাড়ি ফেরায় ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়ছে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের চিসিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সুজাউদ্দিন তালুকদার আমাদের সময়কে বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো ছিল আমরা যে যেখানে আছি সেখানেই ঈদ করা। এভাবে গাদাগাদি করে যাতায়াতের কারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে গেল। ঈদ পরবর্তী সময়ে ভয়াবহতা বাড়বে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা আরও ব্যাপক হলে চিকিৎসা দেওয়াও সম্ভবপর হবে না। অনেক রোগী বিনা চিকিৎসায়ও মারা যেতে পারেন।’

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘আমাদের সচেতনার যথেষ্ট অভাব রযেছে। না হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে যাবো কেন?’

Comment here