নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আজ সোমবার দুপুরে হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানান, মেয়েটির গলা, হাত, গালসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন আছে।
সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘কিছু আঘাত হয়েছে ধর্ষণকারীর দ্বারা, আর কিছু হয়েছে ঘটনাস্থলের কারণে। জঙ্গলের কারণে তার পায়ে কিছু আঘাত হয়েছে। তার গলায় আমরা ধর্ষণকারীর হাতের চিহ্ন পেয়েছি। বোঝা গেছে যে ধর্ষণকারী তার গলা টিপে ধরেছিল। হাতেও একই ধরনের চিহ্ন আছে যেটা থেকে অনুমিত হচ্ছে যে তাকে জোর করে আঘাত করা হয়েছে। লাথি মারা হয়েছে এরকম আঘাতের চিহ্নও পেয়েছি শরীরে।’
ফরেনসিক বিভাগের এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘তবে ধর্ষক একা ছিল নাকি একাধিক ছিল সেটি জানার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া তার গলা এবং মুখমণ্ডলে নখের আঁচড়ের চিহ্নও পাওয়া গেছে।’
ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শাহবাগ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেন ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী।
ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এর আগে রাজধানীর কুর্মিটোলা বাসস্টপসংলগ্ন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুটি দল। এ সময় ভিকটিম ও আসামির ব্যবহৃত জিনিসপত্রসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ব্যাগ, হাতঘড়ি, কলম ও একটি প্যান্ট। এ ছাড়াও পাওয়া গেছে ওই ছাত্রীর ব্যবহৃত বই ও ইনহেলার।
আজ সোমবার দুপুরে আলামত সংগ্রহে ঘটনাস্থলে যান র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের দুটি দল। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের সামনের জঙ্গলের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল শনাক্ত করেছেন তারা। তদন্ত শেষে ঘটনার বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে বলে জানায় র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের দল।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় কুর্মিটোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।
রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শেওড়া যাওয়ার উদ্দেশে ঢাবির বাসে ওঠেন ওই শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা ৭টার দিকে শেওড়ার বিপরীত পাশে কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামেন তিনি। সেখানে অজ্ঞাত ব্যক্তি মুখ চেপে তাকে পাশের একটি স্থানে নিয়ে অজ্ঞান করে ধর্ষণ করে।
রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে নির্জন স্থানে আবিস্কার করেন। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গন্তব্যে পৌঁছান ওই ছাত্রী। পরে রাত ১২টার দিকে তাকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।
Comment here