নিজস্ব প্রতিবেদক : তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনী মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছাড়া কোনো খেলা খেলতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
যুব সমাবেশের মঞ্চে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্মানে দুটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়। এ প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের মঞ্চে যে চেয়ারটা খালি রাখা হয়েছে সেটা আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার। অন্য খালি চেয়ারটি তারেক রহমানের। আমাদের নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য সারা জীবন লড়াই করেছেন। এখনো অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি গৃহবন্দি হয়ে আছেন। আমাদের নেতাকে মিথ্যা মামলায় দিয়ে বিদেশে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, অসংখ্য নেতাকর্মীকে খুন করেছে, গুম করেছে।’
‘খেলা হবে’আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতাদের এই বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কী খেলা হবে। কিসের খেলা হবে। আপনারা এ দেশের ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলছেন। এভাবে খেলা হয় না। খেলা যখন হয় তখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে। খেলা তখনই হবে যখন সরকার থেকে আপনারা পদত্যাগ করবেন। যখন নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেবে তখনই সেই নির্বাচনে খেলা হবে। আমরা বলতে চাই, কোনো খেলা হতে দেওয়া হবে না। এদেশে মানুষ কখনোই সেটা হতে দেবে না।’
বিএনপির চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তিনটা সমাবেশ করায় আপনাদের কম্পন শুরু হয়েছে। এতো কাপাকাপি শুরু হয়েছেন, আপনারা ওই সমাবেশগুলো বন্ধ করবার জন্যে পরিবহন ধর্মঘট করাচ্ছেন। ধর্মঘট দিয়ে কী মানুষকে আটকে রাখা যায়। এ দেশের মানুষ পায়ে হেটে তাদের দাবি জানাতে সমাবেশগুলোতে উপস্থিত হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি বাস মালিক ও শ্রমিকদের বলতে চাই, আপনারা সবসময় জনগণের সেবা করেন। আপনারা জনগণের সঙ্গে ছিলেন। জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণের ভোগান্তি করবেন না।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকার তারা আজকে আমাদেরকে গুলি করে দমন করতে চায়। তারা আমাদেরকে অত্যাচার ও নির্যাতন করে দমন করতে চায়। এদেশের মানুষরা তা করতে দেবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকার বিদ্যুৎখাতে লুটপাট করেছে। যার কারণে তারা এখন দেশে বিদ্যুৎ দিতে পারছেন না। শেয়ার মার্কেট ও ব্যাংক লুটপাটের হিসাবও এই সরকারকে দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘লড়াই কখনো খালি হাতে হয় না। তাই বলে যেখানে সেখানে হাত তুলবেন না। বাধা দিলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আঘাত করলে পাল্টা আঘাত করতে হবে। রাইফেল নিয়ে পুলিশ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ আসবে। তখন আত্মরক্ষায় বাঁশের লাঠি সবার হাতে থাকবে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ যুবক আছে, সে পরিমাণ পুলিশ নেই। সুতরাং পুলিশকে ভয় পাবার কোনো কারণ নেই। শেখ হাসিনার হাতে সময় নেই। এই সরকারকে যেতে হবে।’
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না ও যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, সাইফুল আলম নিরব, মীর আলী নেওয়াজ, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, মোরতাজুল করীম বাদরু, যুবদলের মামুন হাসান, নুরুল ইসলাম নয়ন, কামরুজ্জামান দুলাল, গোলাম মওলা শাহীন, ইছহাক সরকার, খন্দকার এনামুল হক এনাম, মশিউর রহমান রনি।
এরআগে আজ সকালে নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করে শ্রদ্ধা জানান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠার পরপরই ২৭ অক্টোবর জাতীয়তাবাদী যুবদল গঠন করেন।
Comment here