থানায় গিয়ে বাদীই হলেন আসামি! - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ঢাকাসমগ্র বাংলা

থানায় গিয়ে বাদীই হলেন আসামি!

নিজস্ব প্রতিবেদক : থানায় ডেকে নিয়ে সাজানো মামলায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার এক বাদীকেই আসামি বানানোর অভিযোগ উঠেছে পল্লবী থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। গতকাল রবিবার ভোর ৪টার দিকে পরিস্থান পরিবহনের চেয়ারম্যান শেখ শিরিন শান্তির বিরুদ্ধে এ মামলা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বামী ওয়াজউদ্দিন। শিরিন শান্তি ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগেরও সদস্য। গতকাল তাকে আদালতে তোলা হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

ওয়াজউদ্দিন জানান, একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা। তারা চুরি, ছিনতাইসহ এহেন কর্মকাণ্ড নেই যা করে না। শিরিন শান্তি এসবের প্রতিবাদ করলে তাকে নানা ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল সন্ত্রাসীরা। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শান্তির কর্মচারী শামীম বাসায় আসার সময় তুচ্ছ ঘটনায় গালমন্দ করে স্থানীয় সন্ত্রাসী শফি। বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে সবুজ নামে আরেক সন্ত্রাসী এসে শামীমকে মারধর করে। প্রাণ বাঁচাতে তিনি দৌড়ে শান্তির বাসায় আশ্রয় নেন।

এ সময় ওই দুজন ছাড়াও আসামি ফয়সাল সোহেলসহ অচেনা আরও তিন থেকে চারজন বাসার ভেতরে ঢুকে শামীমকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে ওয়াজউদ্দিন এবং তার ছেলে সৈকত ও মেয়ে মুক্তা বাধা দিলে তাদেরও মারধর করে সন্ত্রাসীরা। বাসার ভেতর আসবাবপত্র ভাঙচুর ছাড়াও লুটপাটও চালায় তারা। আহতদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে শিরিন শান্তি বাসায় এসে ছেলে সৈকতকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ঘটনায় গত শুক্রবার চারজনকে আসামি করে পল্লবী থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন শান্তি। এর পর থেকে মামলা তুলে নিতে বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল আসামিরা। কিন্তু গত শনিবার পর্যন্ত হামলায় জড়িত কাউকে পুলিশ আটক না করে উল্টো সমঝোতার কথা বলে থানায় ডেকে নিয়ে বাদীকেই নানা হয়রানি করা হয়।

ওয়াজউদ্দিন বলেন, ‘শনিবার দুপুরে শিরিন শান্তির মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মামলা তুলে নিয়ে আসামিদের সঙ্গে সমঝোতার প্রস্তাব দেয় এবং থানায় ডেকে পাঠায় পল্লবী থানার পুলিশ। এটির কল রেকর্ড আমাদের কাছে রয়েছে। থানায় গিয়ে আমার স্ত্রী পুলিশের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় উল্টো তাকেই মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয়। দেনদরবারের পর গভীর রাতে শিরিন শান্তিকে প্রধান আসামি করা ছাড়াও আহতদেরই হত্যাচেষ্টার মামলায় জড়ায় পুলিশ।’ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন ওয়াজউদ্দিন।

দুটি মামলারই তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্লবী থানার এসআই মো. আবদুুর রহিম। ওয়াজউদ্দিনের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি জানান, ‘শিরিন শান্তি যে মামলা করেছেন সেটির আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে সেটিতেই তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের পর ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।’

Comment here