নতুন ইস্যুর ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

নতুন ইস্যুর ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি

নজরুল ইসলাম : সরকারের বিরুদ্ধে দেশে একের পর এক ইস্যু তৈরি হলেও তা নিয়ে আন্দোলনে জড়াতে চায় না বিএনপি। বরং খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে অনড় থাকতে চায় দলটি। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- এই দুই দাবি আদায়ে ২০ ডিসেম্বর থেকে জেলায় জেলায় সমাবেশ করা হবে। সমাবেশ সফল করতে এরই মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি মনে করে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে তাদের আন্দোলনের পক্ষে যখন দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ, ঠিক তখনই তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী অশালীন মন্তব্য করেছেন- এটি একটি ষড়যন্ত্র। বিএনপির চলমান আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের সড়কের আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে চাচ্ছে সরকার।

এ অবস্থায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়েকে নিয়ে ডা. মুরাদের ‘অশালীন’ মন্তব্যের পরও রাজপথে কোনো কর্মসূচি দেবে না বিএনপি। নেতারা বলছেন, এই ইস্যুতে রাজপথে নামলে বিএনপির মূল আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ কারণে দলটি আইনিভাবে বিষয়টি মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এরই অংশ হিসেবে ৬৪ জেলায় মানহানি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলের নেতারা বলছেন, সরকারের কোনো ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না। এ ব্যাপারে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নানা দিবস উপলক্ষে দলীয়ভাবে কর্মসূচি যা-ই দেওয়া হোক, নেতাদের মূল বক্তব্য থাকবে খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় আমাদের সময়কে বলেন, ‘সরকার মনে করেন, খালেদা জিয়া না থাকলে জাতীয়তাবাদী শক্তি থাকবে না। জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর একই রকম কথা বলেছিল। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্ব দিয়ে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করছেন। এর মধ্য দিয়ে জনগণের কাছে একটি বার্তা গেছে যে, আমাদের পরবর্তী নেতাও আছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করতে তারেক রহমানের ওপর খড়্গ নেমে আসতে পারে। এ ধারণা যদি সঠিক হয়, জিয়া পরিবারের যিনি নেতৃত্ব আসতে পারেন, তার নাম ব্যারিস্টার জাইমা রহমান। জিয়া পরিবারের অন্য কোনো সদস্যও আসতে পারেন। এ জন্যই জিয়া পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে জনগণের সামনে কলূষিত করতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। ডা. মুরাদের অশালীন মন্তব্য এর বাইরে কিছু নয়। এর উদ্দেশ্য জিয়া পরিবারের হাতে যাতে জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতৃত্ব না থাকে, তার অপচেষ্টা করা। এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি।’

গত সোমবার রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে নানা আলোচনা হয়। সভায় অংশ নেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ।

এদিকে ডা. মুরাদ হাসান ইস্যুতে কোনো কর্মসূচি না দিলেও বিএনপির অনেক নেতাই নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। গতকাল ডা. মুরাদের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এর আগে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীল পদে থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং জিয়া পরিবারের সদস্য বিশেষ করে নারী সদস্যদের নিয়ে নারীবিদ্বেষী, বর্ণবাদী, সমাজবিরোধী বক্তব্য সংবিধানবিরোধী। এ বক্তব্যের মাধ্যমে সমগ্র নারী সমাজ এবং মানবতাকে হেয় করা হয়েছে।’

 

Comment here