পিস্তল দেখিয়ে পুলিশ পেটানো সেই যুবলীগ নেতা বহিষ্কার - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

পিস্তল দেখিয়ে পুলিশ পেটানো সেই যুবলীগ নেতা বহিষ্কার

ইউসুফ সোহেল : রাজধানীর পল্লবীতে মাস্ক পরতে বলায় পিস্তল দেখিয়ে কর্তব্যরত পুলিশের এক সার্জেন্টকে পেটানোর অভিযোগে অভিযুক্ত পল্লবী থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানাকে দুই দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ মঙ্গলবার ওই নেতাকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রিয় কমিটি।

প্রসঙ্গত, গত রোববার দুপুরে পল্লবীর কালসী পুলিশ বক্সের অদূরে পুলিশ পেটানোর এ ঘটনার বিষয়ে আজ মঙ্গলবার ‘মাস্ক পরতে বলায় পিস্তল দেখিয়ে পুলিশ পেটালেন যুবলীগ নেতা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয় দৈনিক আমাদের সময়ে। প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পরই বহিষ্কার করা হলো যুবলীগ নেতা জুয়েল রানাকে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মাদক, হত্যা ও হত্যা চেষ্টার একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল আজ সন্ধ্যায় দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘পল্লবীর কালসী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে একটি অপ্রিতিকর ঘটনার প্রেক্ষিতে পল্লবী থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কেন্দ্রিয় কমিটি।’ নীতি নৈতিকতার ব্যত্যয় ঘটিয়ে সংগঠনের কেউ উশৃঙ্খলাতার পরিচয় দিলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলেও হুশিয়ারি দেন তিনি।

পুলিশ পেটানার ওই ঘটনায় গতকাল সোমবার পল্লবী থানায় যুবলীগ নেতা জুয়েল রানাসহ অচেনা আরও ৪০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্য সার্জেন্ট মো. আল ফরহাদ মোল্লা। মামলা নম্বর-৬১।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্লবী থানার এসআই তাপস কুণ্ড আজ সন্ধ্যায় জানান, ঘটনায় জড়িত জুয়েল রানা ও তার সহযোগীরা গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ভুক্তভোগী পুলিশ সার্জেন্ট মো. আল ফরহাদ মোল্লা জানান, তিনি পল্লবী ট্রাফিক জোনে কর্মরত। রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে কালসী পুলিশ বক্সের অদূরেই মূল সড়কে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে বিকল হয়ে পড়ে বসুমতি পরিবহনের একটি বাস। রাস্তায় যানজট লেগে গেলে সহকর্মীদের নিয়ে বাসটি রাস্তা থেকে সড়ানোর চেষ্টা করছিলেন সার্জেন্ট ফরহাদ। এ সময় বিকল হওয়া বাসের চালককে গালাগাল করছিলেন জুয়েল রানা। তাকে থামার জন্য বললে উল্টো ফরহাদকেও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন ওই যুবলীগ নেতা। এ সময় জুয়েলকে মাস্ক পরে কথা বলতে বললে আরও ক্ষেপে গিয়ে ফরহাদকে চরথাপ্পর মারতে থাকেন জুয়েল। একপর্যায়ে জুয়েল প্যান্টের পকেট থেকে পিস্তল বের করে ফরহাদকে গুলি করার জন্য উদ্যোত হন জুয়েল। সহকর্মী ও উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় রক্ষা পান।

সার্জেন্ট ফরহাদ আরও জানান, কালশী ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে দাঁড়িয়ে জুয়েল রানা তার ক্যাডারদের খবর দিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই অচেনা ৩০ থেকে ৪০জন এসে বক্সের মধ্যেই ফরহাদ ও তার সহকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। ছিনিয়ে নেয় তার বডিঅন সরকারী ক্যামেরা; ছিঁড়ে ফেলেন পরিধেয় পুলিশের পোষাক। খবর পয়ে পল্লবী থানা পুলিশ এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে সহকর্মীরা আহত ফরহাদকে ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যায়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে যুবলীগ নেতা জুয়েল রানার মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ওপাশ থেকে সাড়া দেননি তিনি।

ঢাকা মহানগর উত্তরের পল্লবী থানা যুবলীগের সভাপতি ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. তাইজুল ইসলাম বাপ্পী আজ সন্ধ্যায় দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘পুলিশকে মারধরের অধিযোগে দায়ের মামলায় অভিযুক্ত পল্লবী থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে আমিও শুনেছি।’ তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেননি কাউন্সিলর বাপ্পী।

Comment here