পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনিশ্চিত - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ঢাকাসমগ্র বাংলা

পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনিশ্চিত

আবু আলী : আগামী বছর ২০২১ সালের বাণিজ্যমেলা পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন ২০২১ সালের ২৬তম বাণিজ্যমেলা পূর্বাচলে নতুন শহরে বাস্তবায়নাধীন ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিউশন সেন্টারে (বিসিএফইসি) অনুষ্ঠিত হবে।

এ ছাড়া চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি শেরে বাংলানগরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় সমাপনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, ২০২১ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা হবে রাজধানীর পূর্বাচলে। কিন্তু এখনো পুরাপুরি প্রস্তুত নয় পূর্বাচল। তবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের কাছে তিন বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন। খবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রের।

সাধারণত ১ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক মেলা শুরু হয়। মেলা শুরুর ৫-৬ মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। তা না হলে যথাসময়ে মেলা শুরু দুরূহ হয়ে পড়ে। ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার (বিসিএফইসি) চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছে। চুক্তি অনুসারে ২০১৯ সালের ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ করে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বিসিএফইসি প্রকল্পের কাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখার প্রস্তাব করে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে আগামী অক্টোবরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করতে চীনা দূতাবাসকে অনুরোধ করা হয়। সূত্র জানিয়েছে, ঠিকাদার যদি অক্টোবরের মধ্যেও নির্মাণ কাজ শেষ করে তা হলে মেলার প্রস্তুতিতে পাওয়া যাবে নভেম্বর-ডিসেম্বর দুমাস। এ দুই মাসে মেলা আয়োজন সম্ভব নয়। মেলার আয়োজন করতে অন্তত ৬ মাস লাগবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাস্তবতার আলোকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান বাণিজ্য সচিবের কাছে তিন বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, অক্টোবরের মধ্যে বিসিএফইসি বুঝে পাওয়া গেলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১ জানুয়ারি মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আয়োজন করা যেতে পারে। দ্বিতীয়ত সেখানে তিন থেকে ৫ দিনব্যাপী সোর্সিং ফেয়ার আয়োজন করা যেতে পারে। তৃতীয়ত করোনা পরিস্থিতির কারণে ১ জানুয়ারির পরিবর্তে বছরের অন্য কোনো সুবিধাজনক সময়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ২০২১ আয়োজন করা যেতে পারে।

জানা গেছে, প্রতিবছর ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় রাজধানীসহ দেশবাসীর প্রাণের মেলা ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। কিন্তু এ মেলা আয়োজনে অস্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের ফলে প্রতিবছরই অনেক অর্থ ব্যয় হয়। এর বেশিরভাগ অর্থই অপচয় হয়। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের অবকাঠামো নির্মাণের নানা প্রতিকূলতায় পড়তে হয়। এসব বাধা ও বিশাল অঙ্কের অর্থের অপচয় ঠেকাতে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি একটি স্থায়ী এক্সিবিশন সেন্টারের।

১৯৯৫ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ২৫টি আন্তর্জাতিক মেলার মধ্যে ১৮টি প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের মেলা প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলে তা দেশি উৎপাদক/প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে আরও আকর্ষণীয় ও গুরুত্ববহ হবে।

ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল নিউ টাউনের ৪ নম্বর সেক্টরের ৩১২ নম্বর রোডের ০০২ নম্বর প্লটে নির্মাণ করা হচ্ছে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, মোট ৩৫ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন এ সেন্টারে আধুনিক কার পার্কিং, সম্মেলন কক্ষ, সভাকক্ষ, প্রেস সেন্টার, অভ্যর্থনা কক্ষ, বাণিজ্য তথ্যকেন্দ্র, আধুনিক সুবিধাসংবলিত ডরমিটরি থাকবে। এ ছাড়া এক্সিবিশন সেন্টারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক সিসিটিভিসহ আধুনিক সুবিধাসংবলিত ব্যবস্থাসহ বিদ্যুতের জন্য নিজস্ব সাব সেন্টার, সার্ভিস রুম, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, কালভার্ট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে।

Comment here