প্রতিমন্ত্রীর পদ হারালেন মুরাদ, নায়িকা মাহি বললেন ‌‘আলহামদুলিল্লাহ’ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

প্রতিমন্ত্রীর পদ হারালেন মুরাদ, নায়িকা মাহি বললেন ‌‘আলহামদুলিল্লাহ’

নিজস্ব প্রতিবেদক : চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হওয়ার পর তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার রাতে নিজ বাসভবনে মুরাদ হাসানের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এদিকে, ওমরাহ পালনে স্বামীকে নিয়ে এখন সৌদি আরবে রয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদ হারানোর খবর পেয়ে সেখান থেকেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি।

নিজের ফেসবুক আইডিতে এক ভিডিও বার্তায় মাহি বলেন,‘আমার কোনো দোষ ছিল না, আমি শুধু পরিস্থিতির শিকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘যার মাধ্যমে কষ্ট পেয়েছি কোনো না কোনো একদিন তার রেজাল্ট তিনি পাবেন, তিনি ঠিকই তা পেয়েছেন। তো সেটা প্রমাণিত, আলহামদুলিল্লাহ।’

জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে মন্তব্যের জন্য সমালোচনার মুখে থাকা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মুরাদ হাসানের একটি টেলিফোন আলাপের অডিও গত রোববার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকগুলো বিব্রতকর ঘটনার মধ্যে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে সরকার।

বিষয়টি রোববার রাত থেকে গতকাল সোমবার দিনভর ছিল টক অব দ্য কান্ট্রি। কেউ তার আপত্তিকর শব্দ বা মাহিকে ধর্ষণের জন্য পাঁচতারকা হোটেলে ডেকে আনার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না।  এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, এমনকি আওয়ামী লীগেও মুরাদকে নিয়ে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। এদিন বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মুরাদ হাসানের পদত্যাগ দাবি করা হয়।

সূত্র জানায়, মুরাদ হাসানের ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপের বিষয়বস্তু প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়। এর পরই সরকারের উচ্চপর্যায়ে মুরাদ হাসানের পদত্যাগের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়।

এদিকে, গতকাল সোমবার রাত ৯টা ৩১ মিনিটে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক ভিডিও বার্তায় প্রতিক্রিয়ায় শুরুতে সালাম দিয়ে মাহি বলেন, ‘আমি এখন হারাম শরীফে আছি, মক্কাতে। সবাই নিশ্চয়ই জানেন আমি ওমরাতে এসেছি। সেজন্যই কোনো ফোন রিসিভ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি ফোন হাতে রাখছি না, ইবাদত করতে এসেছি ইবাদত করতে চাই। আমি যে কথা বলার জন্য ভিডিও করছি, আমি সেদিনও ভীষণভাবে বিব্রত ছিলাম। নিজের আত্মসম্মানবোধে কতটুকু আঘাত লেগেছে সেটা আমি জানি আর আমার আল্লাহ জানেন। আজকেও আমি ভীষণভাবে বিব্রত এবং একবার আমি ছোট হয়েছি দেশবাসীর কাছে, আরও একবার ছোট হলাম। কিন্তু আপনারা একটু চিন্তা করে দেখবেন এই ভাষার প্রতিউত্তর আমার আসলে কী দেওয়া উচিত ছিল আদৌ কিছু বলার ভাষা সেদিন আমার ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার নিজের মতো করে যতটুকু পাশ কাটিয়ে যাওয়া উচিত ততটুকু পাশ কাটিয়ে গিয়েছি। ঠিক দুই বছর আগের একটা ঘটনা ছিল। আমি বরাবরের মতো সব সময় আমি আল্লাহর কাছে বলি, আল্লাহ আমি কষ্ট পেয়েছি। যার মাধ্যমে কষ্ট পেয়েছি কোনো না কোনো একদিন তার রেজাল্ট তিনি পাবেন, তিনি ঠিকই তা পেয়েছেন। তো সেটা প্রমাণিত, আলহামদুলিল্লাহ।’

সাংবাদিকদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে মাহি বলেন, ‘সাংবাদিক ভাইদের সরি, আমি সবার ফোন রিসিভ করছি না। এ বিষয়টা নিয়ে এখানে কিছু বলার মতো মানসিকতা আমার আপাতত নেই। আপনারা আমার হয়ে আমার জায়গা থেকে চিন্তা করবেন যে আমি দোষী কি দোষী না, আমি এতটুকুই বলব। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন আমাদের ওমরাহটা কবুল করেন। আল্লাহ সাক্ষী আমার কোনো দোষ ছিল না।’

ভিডিওর ক্যাপশনে এই চিত্রনায়িকা লেখেন, ‘বিকৃত এবং কুরুচিপূর্ণ ব্যবহার ও ভাষার প্রতিউত্তরের ভাষা আমার জানা ছিল না, নম্রতা আমার পারিবারিক শিক্ষা।’

 

Comment here