প্রশ্ন ফাঁস : ভাইস চেয়ারম্যান রুপাসহ ১০ জন রিমান্ডে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

প্রশ্ন ফাঁস : ভাইস চেয়ারম্যান রুপাসহ ১০ জন রিমান্ডে

আদালত প্রতিবেদক : সরকারি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের মামলায় বগুড়ার ধুপচাঁচিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরীন রুপাসহ ১০ জনকে দুই মামলায় রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ রেববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ রমনা মডেল থানার মামলায় রূপাসহ ছয়জনের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অন্যদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমী কাফরুল থানার একটি মামলায় হিসাব মহা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিজিএ) বরখাস্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান আজাদসহ চারজনের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন- আল আমিন আজাদ রনি, রাকিবুল হাসান, হাসিবুল হাসান, নাহিদ হাসান, রাজু আহম্মেদ, নোমান সিদ্দিকী, নাইমুর রহমান তানজির ও শহিদুল্লাহ।

গত ২১ জানুয়ারি আসামিদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময় তাদের থেকে ইয়ার ডিভাইস ছয়টি, মাস্টার কার্ড মোবাইল সিম হোল্ডার ছয়টি, পাঁচটি ব্যাংকের চেক, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প সাতটি, স্মার্ট ফোন ১০টি, ফিচার মোবাইল ছয়টি, প্রবেশপত্র ১৮টি ও চলমান পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র তিনটি সেট জব্দ করা হয়। পরদিন তাদের ৫৪ ধারায় প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

গত ২৫ জানুয়ারি রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে হাজির করে রমনা মডেল থানার মামলায় রুপা, রনি, রাকিবলু, হাসিবুল, নাহিদ ও রাজুকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ ১০ দিনের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ আলী। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে ৩০ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেন।

একইদিন হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিজিএ) বরখাস্ত কর্মকর্তা আজাদ, নোমান, তানজির ও শহিদুল্লাহকে কাফরুল থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ডিবি পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর নূর আলম সিদ্দিক। যা একইদিন শুনানির জন্য রাখা হয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের অধীন ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ৫৫০টি অডিটর পদে নিয়োগের জন্য গত ২১ জানুয়ারি বিকেল ৩টা থেকে বিকাল সোয়া ৪টা পর্যন্ত ৭০ নাম্বারের এমসিকিউ পরীক্ষা ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হলগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের কাছে তথ্য ছিল পূর্বে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হওয়া কতিপয় ব্যক্তি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মোবাইল অ্যাপস এবং ব্যক্তি পরিবর্তন করে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, উত্তর বা সমাধান সরবরাহসহ অসদুপায় অবলম্বন করতে পারে। এমন তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।

জানা যায়, বন্ধু রোমানের মাধ্যমে সাত বছর আগে প্রশ্নফাঁসে জড়ান বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সদস্য রুপা। দুই বন্ধু প্রশ্নফাঁস করে নিয়োগ পরীক্ষায় বসতেন। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে দিতেই একসময় নিজেরাই প্রশ্নফাঁসের হোতা বনে যান। এক সময় প্রশ্ন ফাঁস করে রেলওয়েতে চাকরি হয়ে যায় নারায়ণগঞ্জের ছেলে রোমানের।

কিন্তু রুপা প্রশ্নফাঁসের পাশাপাশি রাজনীতি ও তদবির বাণিজ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। হঠাৎ করেই গত বছর সরকারি চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ওঠেন রুপা। একের পর এক চাকরির পরীক্ষা দিতে থাকেন। ১৯৯১ সালে জন্ম নেওয়া রুপার সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়েছে মাসকয়েক আগে। প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের অডিটর পদে নিয়োগ পরীক্ষাই ছিল তার সরকারি চাকরির জন্য শেষ পরীক্ষা।

 

Comment here