প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কের ফাঁদে ফেলে টাকা আদায়, আটক ১০ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
বরিশালসমগ্র বাংলা

প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কের ফাঁদে ফেলে টাকা আদায়, আটক ১০

বরিশাল প্রতিনিধি : প্রেমের ফাঁদ ও শারীরিক সর্ম্পকের প্রলোভন দেখিয়ে উচ্চবিত্তদের ফাঁদে ফেলে মুক্তিপণ আদায়কারী একটি চক্রকে আটক করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ।

প্রতারণার শিকার নগরীর এক ঠিকাদারের অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার রাতভর অভিযান চালিয়ে চক্রের ১০ জনকে আটক করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা।

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের অস্থায়ী কার্যালয়ের মতবিনিময় সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান নগর বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হয়দার।

আটককৃতরা হলেন, জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা মনি, মকবুল হোসেন ও তার স্ত্রী লিজা বেগম, মামুন বায়াতী, সেলিম হাওলাদার, আরিফুর রহমান তালুকদার, ফারজানা আক্তার ঝুমুর, খুশি বেগম ও আশা আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কের ফাঁদে ফেলে ‘টার্গেট ধণাঢ্যদের’ কাছ থেকে চাহিদা মাফিক অর্থ হাতিয়ে নিত এ প্রতারক চক্র। চক্রটি প্রথমে যৌন সর্ম্পক স্থাপনের প্রলোভন দেখিয়ে ভাড়া ফ্লাটে নিয়ে চক্রের অর্ন্তভুক্ত কলেজ পড়ুয়া তরুণীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় চক্রের অপর সদস্যকে দিয়ে আটক করত। এরপর ডিবি পরিচয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে অর্থ আদায় করে করত।

পুলিশ জানিয়েছে, শুধু তারা ১০ জনই নয়, এই চক্রে আরও স্কুল-কলেজের তরুণী জড়িত থাকার তথ্য তারা পেয়েছে।

জানা গেছে, সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) ম্যানেজমেন্ট চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ একমাস ধরে মুঠোফোনে প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়েন এক ঠিকাদার। তিনি বিএম কলেজের যে তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়েন সেই তরুণী ড্রিম হাউজ নামক ব্যক্তি মালিকানাধীন ছাত্রী মেসে বসবাস করতেন। প্রেমের সর্ম্পকের সূত্র ধরে গতকাল মঙ্গলবার দুইজনে সরকারি বরিশাল কলেজের সামনে দেখা করেন এবং কলেজ পড়ুয়া ওই তরুণীর আত্মীয়ের বাসায় অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর জন্য সম্মত হন।  এরপর বিসিসির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের চ্যাটার্জী লেনের লাবু মিয়ার ভাড়া বাসায় ঠিকাদারকে নিয়ে যান ওই তরুণী। সেখানে নিয়ে ঠিকাদারকে বিবস্ত্র করা হয়। ঠিক তখন প্রতারক চক্রের সদস্য জাকির ও মামুন ডিবি সদস্যের পরিচয় দিয়ে আটক করে মারধর করেন। এক পর্যায়ে টাকা দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানায়। ওই ঠিকাদার আত্মরক্ষার্থে সঙ্গে থাকা নয় হাজার এবং বিকাশের মাধ্যমে আরও ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে জিম্মিদশা থেকে মুক্তিপান।

ভুক্তভোগী ঠিকাদার গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করলে অভিযানে নামে ডিবি পুলিশ।

আভিযানিক দলের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ছগির হোসেন ও মহিউদ্দিন মাহি বলেন, ‘এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। আমরা চেষ্টা করছি পুরো চক্রকে আইনের আওতায় আনার জন্য।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হয়দার জানান, আটক ১০ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। ভুক্তভোগী ঠিকাদার বাদী হয়ে আটকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান তিনি।

Comment here