বগুড়ায় ‘গোলাগুলিতে’ সন্ত্রাসী স্বর্গ নিহত - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ক্রাইম

বগুড়ায় ‘গোলাগুলিতে’ সন্ত্রাসী স্বর্গ নিহত

বগুড়া শহরে কথিত গোলাগুলিতে শীর্ষ সন্ত্রাসী রাফিদ আনাম ওরফে স্বর্গ নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপশহরের ধুন্দাল সেতু এলাকায় নামাজগড়-ধরমপুর সড়কে দুই দল সন্ত্রাসীর ‘গোলাগুলিতে’ রাফিদ আনাম (২৫) নামের যুবক নিহত হন।

রাফিদ নিহত হওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর ভাষ্য, নিহত রাফিদ আনাম এলাকায় স্বর্গ নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। তাঁর বাবা বগুড়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী লিয়াকত আলী ২০০৬ সালে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। কিশোর বয়সেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন রাফিদ। ২০১২ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি প্রথম হত্যা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই বছরের ১২ জুন এলাকায় অনুষ্ঠিত কনসার্টে রাফিদের চাচা আরেক সন্ত্রাসী আশরাফ আলীর সঙ্গে তর্কের জের ধরে সরকারি শাহ সুলতান কলেজের ছাত্র নিরঞ্জন চক্রবর্তী দীপু হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই মামলার আসামি ছিলেন তিনি। বলা হয়, এর আগে ২০১১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি শহরের জলেশ্বরী পলা এলাকায় প্রোগ্রেস কোচিং সেন্টারের মালিকানা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে মালিক মোস্তাফিজুর রহমানের ভাগনে শরিফুল আলমকে হত্যা করেন রাফিদ। ওই হত্যাকাণ্ডে তিনি ভাড়াটে খুনি ছিলেন। সবশেষ পয়লা বৈশাখে বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হত্যার ঘটনায়ও তিনি ভাড়াটে খুনি হিসেবে ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মাহবুব আলম খুন হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন মাস আগে জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন রাফিদ আনাম। মাহবুব আলম খুনের সঙ্গে রাফিদ আনামের হত্যার স্টাইলের মিল ছিল।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের দাবি, এলাকায় হত্যাসহ অপরাধ সংঘটনের আগে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রাফিদ আনামকে জামিনে বের করে আনেন। মূলত ভাড়াটে খুনি হিসেবেই কাজ করতেন রাফিদ।রাফিদ আনাম নিহত হওয়ার ঘটনায় বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর ভাষ্য, গতকাল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপশহর ধুন্দাল সেতুর কাছে দুই দল সন্ত্রাসীর মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে টহল পুলিশের দল সেখানে যান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে চলে যান। পরে পুলিশ সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখেন। পাশে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, একটি গুলি ও একটি বর্মি চাকু পাওয়া যায়। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে পুলিশ বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ নিহত ব্যক্তি রাফিদ আনাম বলে নিশ্চিত হন।
সনাতন চক্রবর্তী জানান, রাফিদ আনামের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, অবৈধ অস্ত্র রাখা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলা ছিল।

রাফিদ আনাম নিহত হওয়ার ঘটনায় নিহত কলেজছাত্র নিরঞ্জন চক্রবর্তীর বাবা খোকন চক্রবর্তী বলেন, আসামিদের অন্তত একজন নিহত হয়েছেন জেনে তাঁর কিছুটা হলেও শান্তি লাগছে। আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তাঁর ছেলে হত্যা মামলার চার আসামির মধ্যে একজন ছিলেন রাফিদ আনাম। সাত বছরেও মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করা হয়নি।

Comment here