বাংলাদেশকে এখনো ‘দুর্বল’ মনে করে পাকিস্তানিরা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ক্রিকেটখেলাধুলা

বাংলাদেশকে এখনো ‘দুর্বল’ মনে করে পাকিস্তানিরা

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে বাবর আজমের সেঞ্চুরির পরও হেরেছে পাকিস্তান। সংবাদ সম্মেলনে বাবরের স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশ দলকে খাটো করেছেন পাকিস্তানের এক সংবাদকর্মী

মাইকেল ক্লার্কের মতে, বাবর আজম ‘পাকিস্তানের বিরাট কোহলি’। ওয়ানডেতে তাঁর ব্যাটিং গড় ৫০–এর ওপরে। স্ট্রাইক রেট ৮৬ ছুঁইছুঁই। কিন্তু পাকিস্তানের এক সংবাদকর্মী বাবরের স্ট্রাইকরেট নিয়ে প্রশ্ন তুলে তুলনা করেছেন বাংলাদেশ দলের সঙ্গে। সেই প্রশ্নের ভেতরকার ইঙ্গিতটা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা বুঝতে সমস্যা হয়নি। বাংলাদেশকে এখনো ছোট সারির দল বলেই মনে করে পাকিস্তানের ক্রিকেট মহল—এমনটাই মনে করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ব্রিস্টলে গত শুক্রবার বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটে হেরেছে পাকিস্তান। বাবর আজম অবশ্য সেঞ্চুরি করেছেন। ১০৮ বলে ১১২ রানের ইনিংসটি খেলার পরেও পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম খুশি হতে পারেনি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের এক সাংবাদিক তাঁর স্ট্রাইকরেট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানা গেছে, সেই সংবাদকর্মী পাকিস্তানের সামা টিভির প্রতিবেদক। নিজ দেশের খেলোয়াড়ের কোনো দুর্বলতা নিয়ে সাংবাদিক প্রশ্ন করতেই পারেন। কিন্তু প্রশ্নটা উঠছে, বাংলাদেশের নেতিবাচক তুলনাটিই।

বাবরকে সেই সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, ‘আপনার মতো টি-টোয়েন্টির শীর্ষ ব্যাটসম্যান কী কারণে ধীরগতির সেঞ্চুরি করেন? ট্রেন্টব্রিজে একটি সেঞ্চুরি করেছিলেন, সেখানেও স্ট্রাইক রেট (১১২ বলে ১১৫) কম ছিল। আজ যে সেঞ্চুরি করলেন, সেখানেও স্ট্রাইক রেট যেটা দেখেন, সেটি বাংলাদেশেরও নিচে নেমে এসেছে। লোকে বলে, আপনি নাকি নিজ স্বার্থের জন্য খেলেন?’ বাবর এ প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘আপনার হয়তো মনে হতে পারে, কিন্তু আমি টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলি। নিজের জন্য খেলি না। এটা আমার নিজের দল না, এটা পাকিস্তান দল।’

পাকিস্তানের সেই সংবাদকর্মী নিজের প্রশ্নে বাংলাদেশকে টেনে আনাটা খুব সম্ভবত পুরোনো অভ্যেসবশতই—এমনটাই বলা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আলোচনায়। আসলে একসময় পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে অনেক শক্তিশালী দল ছিল, সেই ইতিহাসটাই এখনো ভুলতে পারেন না অনেক পাকিস্তানি। কিন্তু নতুন ইতিহাসটা হচ্ছে, বাংলাদেশ আর পাকিস্তান এখন সমশক্তির দলই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে তো অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকই এগিয়ে রাখেন পাকিস্তানের চেয়ে। পাকিস্তানি সাংবাদিকেরা বোধ হয় বারবারই ভুলে যান ২০১৫ সালের পর থেকে দুই দল যতগুলো ওয়ানডে খেলেছে, তার প্রতিটিতেই হেরেছে পাকিস্তান। এমনকি যে টি-টোয়েন্টি নিয়ে পাকিস্তানিদের গর্ব, সেটিতেও বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ জিতেছে।

স্ট্রাইকরেটে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে, তুলনার একটা কারণ সেটি হতে পারে। স্ট্রাইকরেটের ব্যাপারটি বাংলাদেশ দলের একটা দুর্বলতা। এ জায়গায় পাকিস্তান আর আফগানিস্তান এগিয়ে। কিন্তু প্রশ্নটা উঠছে বাবরকে প্রশ্ন করার সময় সেই পাকিস্তানি সাংবাদিকের বলার ধরন নিয়েই।

এই চার বছরে ৮ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পথে প্রতি সেঞ্চুরিতে গড়ে ১০৫টি বল খেলেছে আফগানরা। পাকিস্তান ৩১ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পথে আফগানদের চেয়ে গড়ে ১টি বল বেশি খেলেছে। বাংলাদেশের সেঞ্চুরিসংখ্যা আফগানদের চেয়ে বেশি; ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২২টি সেঞ্চুরি পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রতি সেঞ্চুরিতে গড়ে ১০৯টি করে বল খেলেছেন ব্যাটসম্যানেরা।

বাবর আজমের সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও লিংক: 

Comment here