বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের মামলার রায় আজ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ঢাকাসমগ্র বাংলা

বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের মামলার রায় আজ

আদালত প্রতিবেদক : সোয়া এক বছর আগে দুই বাসের রেষারেষিতে চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছিল রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজিব ও দিয়া। মর্মান্তিক ওই মৃত্যুর প্রতিবাদে নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে বিশ্বব্যাপী সংবাদ শিরোনাম হয়েছিল তারা। রাজিব-দিয়ার মৃত্যুতে দায়ের মামলায় আজ রবিবার রায় ঘোষণা করবেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ।

রায়ে প্রত্যাশা সম্পর্কে ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। তাই আসামিদের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন সাজাই প্রত্যাশা করছি।

মামলার বাদী নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে রাজিব-দিয়াকে খুন করা হয়েছে। তাই আমাদের প্রত্যাশা আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে- যাতে অন্য চালকরা ভয় পায়, রাস্তায় অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বিরত থাকে। তবে আসামিপক্ষের এক আইনজীবী টিএম আসাদুল সুমন বলেন, মামলায় অনেক ত্রুটি ছিল। তাই আশা করছি আসামিরা খালাস পাবেন।

মামলার আসামিরা হলেন জাবালে নূর পরিবহনের ঘাতক বাসের চালক মাসুম বিল্লাহ, হেল্পার এনায়েত হোসেন ও একই পরিবহনের আরেক বাসের চালক জোবায়ের সুমন ও হেল্পার আসাদ কাজী এবং বাস দুটির মালিক জাহাঙ্গীর আলম ও শাহদাত হোসেন আকন্দ।

আসামিদের মধ্যে শাহদাত হোসেন আকন্দের অংশের বিচার হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত থাকায় বাকি ৫ জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা হবে আজ।

গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর চার্জশিট দাখিল করে ডিবি পুলিশ। ২৫ অক্টোবর চার্জগঠন করেন আদালত। ১৪ নভেম্বর মামলাটির যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়।

আসামিদের যে দণ্ড হতে পারে

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২৭৯ ও ৩০৪ ধারায় চার্জগঠন করেন আদালত। এর মধ্যে ২৭৯ ধারায় মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে এরূপ বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জন্য ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড এবং ৩০৪ ধারায় খুন বলে গণ্য নয় এরূপ নরহত্যার জন্য যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই দুপুরে কলেজ ছুটির পর ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের ঢালে বাসের জন্য দাঁড়িয়েছিল শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় যাত্রী তুলতে জাবালে নুর পরিবহনের দুটি বাস পাল্লাপাল্লি করে বেপরোয়া গতিতে ফ্লাইওভার দিয়ে নেমে আসে। একটি বাস এগিয়ে গিয়ে যাত্রী তুলতে দাঁড়ালে অন্যটি তার বাম পাশে ঢুকিয়ে দিলে চাপা পড়ে শিক্ষার্থীরা। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম। এছাড়া ১৩-১৪ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। ওইদিন রাতে ক্যান্টনমেন্ট থানায় নিহত দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর আলম হত্যা মামলা করেন।

Comment here