ঈদের ছুটির আর দুদিন বাকি থাকলেও প্রায় অর্ধেকের মতো ৪ হাজার ৫৯৩টি পোশাক ও শিল্প কারখানায় এখনো ঈদ বোনাস হয়নি। মে মাসের বেতন বাকি আছে ৩০৩টি কারখানায়। গতকাল দুপুর ২টা পর্যন্ত শিল্প পুলিশের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। তবে বিকালেও বিভিন্ন কারখানায় বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। এদিকে কার্যাদেশ কমে যাওয়াসহ অর্থ সংকটে থাকায় চলতি জুনের অগ্রিম ১৫ দিনের বেতন দেবেন না পোশাক কারখানা মালিকরা। তবে মে মাসের বেতনসহ ঈদ বোনাস পরিশোধে কারখানাগুলোকে তাগিদ দিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
শিল্প পুলিশের তথ্যমতে, পোশাকসহ দেশের ৯ হাজার ৯১৫টি কারখানার মধ্যে বোনাস পরিশোধ হয়েছে ৫৩২২টিতে এবং মে মাসের বেতন হয়েছে ৯ হাজার ৬১২টিতে। মে মাসের বেতন হয়েছে ৯৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ কারখানায়। তথ্যমতে, বিজিএমইএর তালিকাভুক্ত ১ হাজার ৬২৪টি পোশাক কারখানার মধ্যে বোনাস হয়নি ৬৬১টি কারখানায় এবং বিকেএমইএর ৬৯৯টি কারখানার মধ্যে বোনাস হয়নি ২৮২টিতে।
বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম আমাদের সময়কে বলেন, অধিকাংশ কারখানা বেতন-বোনাস পরিশোধ করেছে। আরও দুদিন কারখানা চালু থাকবে। এর মধ্যে শতভাগ পরিশোধ হবে বলে আশা করা যায়। বিজিএমইএর তালিকাভুক্ত ৯৮.৫ শতাংশ কারখানায় মে মাসের বেতন হয়ে গেছে। অধিকাংশ কারখানায়ও বোনাস হয়ে গেছে। অর্থ সংকটের কারণে অনেক কারখানা চলতি মাসের অগ্রিম বেতন দিতে পারছে না। তবে গত মাসের বেতন-বোনাস পরিশোধে মালিকদের বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে বিটিএমএর ৩৫৯টি কারখানার মধ্যে বোনাস হয়নি ১৫৩টিতে। সব মিলিয়ে পোশাকসহ শিল্প কারখানায় এখনো ৪৬ দশমিক ৩২ শতাংশ কারখানায় বোনাস বকেয়া রয়েছে।
শিল্প পুলিশের তথ্যমতে, বিজিএমইএর তালিকাভুক্ত ১ হাজার ৬২৪টি কারখানার মধ্যে এখনো মে মাসের বেতন হয়নি ৬৯টিতে এবং বিকেএমইএর ৬৯৯টি কারখানার মধ্যে ৩২টিতে মে মাসের বেতন হয়নি। বিটিএমএর ১৮টিতে এখনো মে মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বেপজার তালিকাভুক্ত ৩টি কারখানায় বেতন হয়নি। ৯০টি পাটকলের সবগুলোতে মে মাসের বেতন পরিশোধ হয়েছে। দেশের অন্যান্য ৬ হাজার ৭৫১টি কারখানার মধ্যে ১৮১টিতে মে মাসের বেতন হয়নি।
শিল্প পুলিশের তথ্য থেকে আরও জানা গেছে, জুনের ১৫ দিনের বেতন হয়েছে ৯৮৪টি এবং বেতন হয়নি ৮৯৩১টি কারখানায়। বিজিএমইএর ৮২টি কারখানায় জুনের ১৫ দিনের বেতন হয়েছে। পোশাক খাতের অন্য দুই সংগঠন বিকেএমইএ ও বিটিএমএর ৫২ ও ৩০টি কারখানায় জুনের ১৫ দিনের বেতন হয়েছে। সব মিলিয়ে জুনের ১৫ দিনের বেতন হয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ কারখানায়।
নিটওয়্যার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আমাদের সময়কে বলেন, প্রায় অধিকাংশ কারখানায় এর মধ্যে মে মাসের বেতন দেওয়া হয়ে গেছে। বোনাস দেওয়া চলছে। কিছু কারখানায় বোনাস দিতে সমস্যা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কারখানা মালিকরা এখনো প্রণোদনার টাকা পায়নি। গত তিন মাসের রপ্তানি প্রণোদনা বাবদ ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে আটকে আছে। সেই টাকা ছাড় হলেও শ্রমিকদের বোনাস দেওয়া সহজ হতো। আশা করা যায়, বন্ধের আগে শতভাগ কারখানায় বেতন-বোনাস হয়ে যাবে। কোনো শ্রমিক বেতন-বোনাস ছাড়া ঈদ করবে না।
Comment here