ভারতে এক ব্যক্তিই আক্রান্ত করেছেন ৪০ হাজার মানুষকে

দৈনিক মুক্ত আওয়াজ ডেস্ক : ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জাবের কর্তৃপক্ষ সেখানকার ২০টি গ্রামের অন্তত ৪০ হাজার বাসিন্দাকে কোয়ারেন্টিনে আটক রেখেছে। কারণ সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের সবার দেহে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে মাত্র একজনের কাছ থেকে। ইতোমধ্যেই ৭০ বছর বয়সী বলদেব সিং নামে ওই ব্যক্তি সম্প্রতি করোনা ভাইরাসে মারা গেছেন। আর তার মাধ্যমে অন্যদের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে বলদেব সিংয়ের মৃত্যুর পর।

বলদেব সিং ছিলেন একজন শিখ ধর্মপ্রচারক। সম্প্রতি তিনি ইতালি এবং জার্মানি সফর শেষে দেশে ফেরেন। এর পরই তার শরীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ দেখা যায়। কিন্তু এ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর জন্য জনবিচ্ছিন্ন থাকার যেসব উপদেশ রয়েছে তিনি এর কোনোটাই মেনে চলেননি। বরং বলদেব সিং

মৃত্যুর কিছুদিন আগেও শিখ ধর্মের একটি উৎসব হোলা মহল্লা উপলক্ষে বড় ধরনের এক জনসমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। ছয় দিনব্যাপী ওই উৎসবে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। বলদেব সিংয়ের মৃত্যুর পর পরীক্ষায় তার ১৯ আত্মীয়ের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে।

পাঞ্জাবের এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, এ পর্যন্ত আমরা ৫৫০ ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পেরেছি যারা সরাসরিভাবে বলদেব সিংয়ের সংস্পর্শে এসেছিল। কিন্তু এ সংখ্যা এখন বাড়ছে। পাঞ্জাবের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, বলদেব যেখানে থাকতেন তার আশপাশে ১৫টি গ্রাম আমরা সিল করে দিয়েছি। পাশের জেলার পাঁচটি গ্রামও লকডাউন করা হয়েছে।

তবে ভারতে এত বেশি সংখ্যায় মানুষকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর ঘটনা এটাই প্রথম নয়। রাজস্থানের ভিলওয়ারা শহরের একদল ডাক্তার যারা নিজেরাই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের মাধ্যমে বহু লোকের মধ্যে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ওই শহরের কাছের গ্রামগুলোয় ৭ হাজার মানুষ এখন কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।

গতকাল শনিবার পর্যন্ত ভারতে মোট করোনা ভাইরাস রোগীর সংখ্যা ৯৩৩ জন ও মৃতের সংখ্যা ২০ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে পাঞ্জাবে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮ জন ও মারা গেছে ১ জন। তবে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ভারতে করোনা ভাইরাস রোগীর আসল সংখ্যা অনেক বেশি হবে। কারণ দেশটিতে রোগীর পরীক্ষার হার অনেক কম। তবে সম্প্রতি পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খবর : বিবিসির।