ভিসানীতি লজ্জার, দায়ী সরকার: মির্জা ফখরুল - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
রাজনীতি

ভিসানীতি লজ্জার, দায়ী সরকার: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধ কার্যকরের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য খুশির নয়, লজ্জার। এ জন্য দায়ী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার।’

আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ’র ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই ভিসানীতি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া দেশগুলোর ওপর পড়েছে। যে দেশেগুলো মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়, গায়ের জোরে গুম-হত্যা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় সেই দেশগুলোর বিরুদ্ধে।’

তিনি বলেন, ‘এই ভিসানীতিতে নাকি আমদের সাংবাদিকরাও পড়বেন, মিডিয়ার কথা বলা হয়েছে। ভিসানীতিতে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, বিচারক, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পড়বেন। বাদ থাকল কে? কেন এই জাতিকে এই অবস্থার মধ্যে পড়তে হলো? আমরা বেশ ভয়ানক অবস্থার মধ্যে পড়েছি। অনেকে ওইভাবে চিন্তা করছেন না; অনেকে আছেন যে খুব খুশি হয়েছি আমরা। এটা তো খুশির ব্যাপার না, এটা লজ্জার ‘সেইম’।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ জন্য সম্পূর্ণ দায়ি শেখ হাসিনার ভয়াবহ কর্তৃত্ববাদী শাসন, যারা আজকে নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গোটা দেশ ও জাতিকে জিম্মি করে ফেলেছে। তাদের কথা শুনলে মনে হবে না যে এই দেশে কোনো ভদ্রলোক বাস করে, কোনো স্বাধীন মানুষ বাস করে। এই দেশে শুধুমাত্র বাস করবে তারা, আর আমরা প্রজা।’

এ সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ও তার দলের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের নির্যাতন-নিপীড়ন এবং দ্রুত সাজা দেওয়ার বর্ণনা দেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাজাহানের একটি মামলা রায় পর্যায়ে আছে বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় আমাদের বেশিরভাগ নেতাকর্মী তাদের নিজের বাসায় থাকতে পারে না। তারা অন্যত্র বাসাভাড়া করে থাকেন। প্রতিদিন তাদের মামলার হাজিরা দিতে আদালতে যেতে হয়। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাজাহান ভাইয়ের ভাটারা থানার একেবারেই ঢাহা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলার ট্রায়াল হয়ে গেছে, আজকে রায় ছিল। এই যে মানুষের টেনশন। প্রতিটি মানুষকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। আমাদের দলের সব সিনিয়র নেতাদের মামলাগুলো প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আইনমন্ত্রণালয়ে একটি সেল তৈরী করেছে; কত দ্রুত সব সিনিয়র নেতাদের মামলাগুলো ট্রায়াল করে সাজা দিয়ে নির্বাচনে অবৈধ ঘোষণা করা যায়।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিদেশে গিয়ে অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী যেসব কথা বলেন, তার কথায় বাংলাদেশকে দুইশক্তির মধ্যে মুখোমুখি করে দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য সুখকর নয়; এটা উদ্বেগজনক।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘তাদের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সেই কারণে এদেশের কোনো মানুষ শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না। সব রাজনৈতিক দল একই কথা বলছে। তারপরও দেখেন এই আওয়ামী লীগ সরকার কতটা দেউলিয়া হয়ে গেছে তারা আমাদের দল ভাঙ্গার চেষ্টা করছে। আমাদের দল যাদের বহিষ্কার করেছিল তাদের দিয়ে এটা করা হচ্ছে। এগুলো করে লাভ হবে না। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। মানুষ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণ মূলক একটি নির্বাচন চায়। এই দাবিতে আমরা রাজপথে আছি। যতই নির্যাতন করুক আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

‘আসম হান্নান শাহ্ স্মৃতি সংসদ’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও বিএনপি নেতা মজিবুর রহমানের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন, বেনজির আহমেদ টিটু, প্রয়াত হান্নানশাহ’র পুত্র শাহ রিয়াজুল হান্নান।

Comment here