মাস্ক কিনতে ছুটছে মানুষ, প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে দাম - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

মাস্ক কিনতে ছুটছে মানুষ, প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে দাম

জনি রায়হান : বাংলাদেশে তিনজনের শরীরে ধরা পড়েছে মরণঘাতী করোনাভাইরাস। আজ রোববার এ তথ্য দিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

আজ বিকেলে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার তথ্য প্রকাশের পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন ফার্মেসিতে মাস্ক কিনতে ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ। ফার্মেসিগুলো থেকে মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেছে মাস্ক। দুই-এক জায়গায় যে স্বল্প সংখ্যক মাস্ক দেখা যাচ্ছে, প্রতি মুহূর্তেই তার দাম বাড়ছে।

আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দামে সাধারণ মানুষকে মাস্ক কিনতে হচ্ছে। করোনাভাইরাস রক্ষা পেতে মাস্ক কিনতে দামের কথা না ভেবেই ফার্মেসিগুলোতে ছুটছেন তারা।

আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, মিরপুরের বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে মাস্কের হাহাকার ও দাম বৃদ্ধির চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।

মামুন হাওলাদার নামের এক ব্যক্তি দৈনিক মুক্ত আওয়াজকে বলেন, ‘আজ বিকেলে করোনাভাইরাসের খবরটা শোনার পরই পরিবারের জন্য পাঁচটি মাস্ক কিনতে কল্যাণপুর এলাকার একটি ফার্মসিতে যাই। সেই দোকানে কয়েকটি মাস্ক ছিল। কিন্তু অনেক বেশি দাম চাওয়ায় আমি আরও কয়েকটি ফার্মেসিতে যাই। তবে কোথাও মাস্ক না পেয়ে আবারও ওই ফার্মেসিতে মাস্ক কিনতে এসে শুনি, ১০ মিনিটেই তাদের দোকানের সব মাস্ক বিক্রি হয়ে গেছে।’

মাস্ক কেনার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকার শাহীন মিয়া বলেন, ‘আজ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ১০ টাকার মাস্ক ৩০ টাকায় কিনেছি। কিন্তু আধা ঘণ্টা পরে আবারও কয়েকটি মাস্ক কিনতে গিয়ে শুনি সব বিক্রি হয়ে গেছে।’

মিরপুরের ৬০ ফিট এলাকার আলমগীর হোসেন নামের এক ফার্মেসি মালিক বলেন, ‘মাস্কের দাম গত কয়েক দিন থেকেই বেশি। তাই কাস্টমারও কিনতে এলে নানা তর্ক-বির্তক করেন। সে কারণে অল্প কিছু মাস্ক দোকানে ছিল। কিন্তু টিভিতে করোনাভাইরাসের খবর দেখার ৫০ মিনিটের মধ্যেই আমার দোকানের সব মাস্ক বিক্রি হয়ে গেছে।’

উল্লেখ্য, আজ বিকেলে আইইডিসিআরের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের বিষয়টি জানান জানান সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী এবং দুজন পুরুষ। তাদের মধ্যে পুরুষ দুজন ইতালিফেরত বাংলাদেশি।

আক্রান্তদের কীভাবে শনাক্ত করা হলো-এমন প্রশ্নের জবাবে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘তারা (ইতালি থেকে) দেশে আসার পরে তাদের যখন লক্ষণ উপসর্গ হয়েছে, আমাদের হটলাইনে যোগাযোগ করেছেন। তার ভিত্তিতেই আমরা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে তাদের মধ্যে যখন পেয়েছি তখন আমরা কনটাক্ট রিচিং করেছি এবং আপনারা বুঝতে পারছেন যে, আমরা গতকাল পেয়ে গতকালই কনটাক্ট রিচিং করে নমুনা সংগ্রহ করেছি এবং সেখান থেকে আমরা আরও একজনকে পেয়েছি।’

করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, ‘আমরা আমাদের এই কার্যক্রমগুলো অর্গানাইজড হয়ে যেভাবে করছি, তাতে করে এটা নিয়ে আমাদের কারোরই দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা অবশ্যই করোনাকে প্রতিরোধ করে রাখতে পারব।’

চীনের ‍হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে অন্তত ৯৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন অন্তত ৩ হাজার ৬০০ মানুষ। এই ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা এখন পর্যন্ত লাখ ছাড়িয়েছে। দিন দিন সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

Comment here