মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পরও হাসছিলেন রিফাত ফরাজী - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পরও হাসছিলেন রিফাত ফরাজী

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ মামলার রায় ঘোষণার পর প্রিজনভ্যানে তোলার সময় প্রধান আসামি রিফাত ফরাজীকে (২৩) হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে। এ সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আল কাইউম ওরফে রাব্বি আঁকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে সিফাত (১৯) ও রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয়কেও (২২) হাসতে দেখা যায়। তবে মো. হাসান (১৯) নামের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে মলিন দেখা গেছে।

আজ বুধবার রায় ঘোষণার পর বিকেল ৩টার দিকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামিকে প্রিজনভ্যানে করে কারাগারে নেওয়া হয়। আর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে নেওয়া হয় আলাদা একটি মাইক্রোবাসে করে।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন নয়ন বন্ড। তিনি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর রিফাত ফরাজী এ মামলার এক নম্বর আসামি হন। একই সঙ্গে রিফাত ফরাজীর ছোট ভাই এই মামলার কিশোর আসামিদের একজন। তারা বরগুনা শহরের ধানসিঁড়ি সড়কের আহসান হাবিব ওরফে দুলাল ফরাজীর ছেলে।

 

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, ধারালো দা দিয়ে রিফাতকে একের পর এক কোপ দিতে থাকেন দুই যুবক। ওই সময় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ওই দুই যুবককে প্রতিহত করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রিফাতকে বাঁচানো যায়নি। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করা হয়। এরপর আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হলে মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নিকে গত বছরের ১৬ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। দুদিন পর মিন্নিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তখন ১৬৪ ধারায় মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদালতে রেকর্ড করা হয়। পরদিন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন।

অবশ্য মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন শুরু থেকেই অভিযোগ করেন, নির্যাতন করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মিন্নিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে পুলিশ। এর নেপথ্যে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের মদদ রয়েছে।

গত ৩০ জুলাই বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান মিন্নির জামিন নামঞ্জুর করেন। তার আগে ২১ জুলাই বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালত মিন্নির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। গত বছরের ২৯ আগস্ট শর্তসাপেক্ষে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। সেই থেকে জামিনে ছিলেন রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া মিন্নি। আজ তাকে আবার গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে নেওয়া হয়।

Comment here