যুদ্ধ ও অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন: প্রধানমন্ত্রী - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
জাতীয়

যুদ্ধ ও অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যুদ্ধ মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না। বিশ্বনেতাদের বলবো, যুদ্ধ ও অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন। অস্ত্র বানানোর টাকা বিশ্বের উন্নয়নে ব্যয় হোক। আমরা যুদ্ধ চাই না, কারণ যুদ্ধ ধ্বংস করে। আমরা শান্তি চাই।’

আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ উদযাপন ও শেখ রাসেল পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বিশ্বে একের পর এক যুদ্ধ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এখন আবার ফিলিস্তিনের ওপর আক্রমণ করছে ইসরায়েল। দুপক্ষেরই শিশু নিহত হয়েছে। গতকাল দেখলাম হাসপাতালে আক্রমণ হয়েছে। সেখানেও শিশু মারা গেছে। এই যুদ্ধের ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও শিশু। যুদ্ধের ফলে শিশু হারায় বাবা-মা, বাবা-মা হারায় সন্তানদের। ১৯৭১ ও ১৯৭৫-এ আমরা এই ভয়াবহতা দেখেছি।’

ছোট ভাই রাসেলের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রাসেলের জীবনে একটা বড় শখ ছিল বড় হয়ে সে আর্মি অফিসার হবে। কিন্তু সেই শখ তো আর পূর্ণ হয়নি। ১৫ আগস্ট বাবা-মা, ভাই সবাইকে হত্যার পর সব শেষেই রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করে।’

তিনি বলেন, ‘আমার ছোট বোন আর আমি বিদেশে ছিলাম। ছয়টি বছর আসতে পারিনি। আর আমাদের এই হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকারও ছিল না। কারণ ৭৫’র পর আরেক মিলিটারি ডিক্টেটর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করার পর এই যে ক্ষমতা দখলকারী জেনারেল জিয়া ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করে। জনগণের ভোট চুরি করে, পার্লামেন্ট বানিয়ে সেখানে সেই আইনটা আইনে পরিনত করে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন ফিরে আসি, এমন একটি দেশে যেখানে আমার বাবার হত্যাকারী, যেখানে ১০৭১ সালের যুদ্ধাপরাধী, যারা গণহত্যা চালিয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে, নারী ধর্ষণ করেছে তাদের রাজত্ব। প্রতি পদে পদে বাধা।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘বাবা-মা সব হারিয়েছিলাম। আমার হারাবার কোন ভয় ছিল না। আমার প্রচেষ্টাই ছিল কিভাবে আমি দেশটাকে গড়ে তুলব। আর আমাদের এই ছোট্ট শিশু, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তারা যেন একটা সুন্দর জীবন পায়।’

স্মার্ট বাংলাদেশ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আগামী দিনে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ করবো। আজকের শিশু-কিশোররাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ চালাবে। আমি সেভাবে তোমাদের গড়ে তুলতে চাই।’

আমাদের শিশুরা আরও উন্নত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজ থেকে ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ কেমন ছিল? ’৯৬ সালে সরকারে এসে ডিজিটাল সিস্টেমের ব্যবস্থা করেছি, ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করেছি। ২০০৯-এর পর থেকে আজ পর্যন্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। আমরা শান্তি চাই, আমরা দেশের উন্নতি চাই।’

এ সময় শিশুদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের শিশুরা লেখাপড়া শিখবে। এখানে অনেক শিশুরা রয়েছে, তোমরা গুরুজনের কথা মেনে চলবে, মা-বাবার কথা মেনে চলবে। তোমরা লেখাপড়া শিখবে। একটা কথা মনে রাখবে, ধনসম্পদ কিছু থাকবে না, শুধু শিক্ষাটা থাকবে। শিক্ষাটাই মূল শক্তি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েদের ছোটবেলা থেকে একটা কথাই শিখিয়েছি, টাকাপয়সা ও সম্পদ আমরা কিছুই রেখে দিতে পারবো না, তোমাদের লেখাপড়া শিখতে হবে। তারা বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়েছে।’

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলকের সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সচিব সামসুল আরেফিন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ শরাফাত, সাংগঠনিক সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ‘স্মরণের আবরণে শেখ রাসেল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে রাসেলের স্মৃতি নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল (অব.) অশোক কুমার তারা’র ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়।

Comment here