রাজধানীতে গণপরিবহন সংকট, দুর্ভোগ চরমে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

রাজধানীতে গণপরিবহন সংকট, দুর্ভোগ চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম গতকাল শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে বাড়িয়েছে সরকার। এর পরপরই রাজধানীতে বাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে রাজধানীতে আগের মতো বাসের দেখা মিলছে না। দীর্ঘ সময় পরপর দু-একটি বাস এলেও তাতে উঠতে পারছেন না যাত্রীরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীর কর্মজীবী মানুষ।

সকাল থেকে নগরীর ফার্মগেট, মহাখালী, মিরপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন ও কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দুর্ভোগের এ চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বাসের জন্য মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন শত শত মানুষ। মাঝে মধ্যে দু-একটি বাস এলেও সেগুলোতে যাত্রীতে পরিপূর্ণ। ভেতরে মানুষ গাদাগাদি করছেন। বিভিন্ন স্থানে দু-একজন নেমে গেলেও হুড়োহুড়ি করে উঠছেন ৩/৪ জন। অনেকেই বাসের দরজায় ঝুলতে দেখা গেছে। অনেকে বাসে উঠতে পারবেন না এমন আশঙ্কা থেকে বিকল্প উপায়ে তাদের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন।

মগবাজার মোড়ের প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, কর্মস্থল উত্তরা হাউজ বিল্ডিং। প্রতিদিনের ন্যায় সকাল ৮টা থেকে বাসের জন্য মগবাজার মোড়ে অপেক্ষা করছি। আজ রাস্তা ফাঁকা। সড়কে বাস নেই। দু-একটারে দেখা মিললেও যাত্রীদের চাপে উঠা যাচ্ছে না। বাস দেখা মাত্র মানুষ হুড়োহুড়ি করছে। এতে গড়ে প্রতিটি বাসে ১/২ জন ছাড়া কেউই উঠতে পারছেন না। বাসের সংকট কাজে লাগিয়ে সিএনজি ও রিকশা চালকরা বাড়তি ভাড়া চাচ্ছেন।

হুমায়ুন নামের একজন চাকরিজীবী বলেন, ‘সকাল সাড়ে আটটা থেকে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু বাসে উঠতে পারছি না। অধিকাংশ বাস গেট বন্ধ করে আসছে। আমি তো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। ভেবেছিলাম আজ ছুটির দিনে ভোগান্তি কিছুটা কম হবে। কিন্তু ভোগান্তির তো কোনো শেষ নেই।’

রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর থেকে গুলশানে যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী অশিত কুমার। তিনি বলেন, ‘ভোর থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এজন্য আজ হাতে একটু বেশি সময় নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো বাসে উঠতে পারিনি। সড়কে বাস কম, যে কয়টা বাস আসছে সেগুলো আগে থেকেই যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে আসছে। ফলে সেই বাসে আর ওঠার সুযোগ থাকছে না।’

মৌচাক থেকে মিরপুরে অফিসে আসেন কবির হোসেন নামে একজন। তিনি বলেন, সকালে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থেকে না পেয়ে বেশি টাকা দিয়ে অটোরিকশাতে এলাম। ফেরার সময় আবার কী হবে তাই ভাবছি।

গাজীপুর থেকে মিরপুরে অফিস আসেন ইসমাইল হোসেন নামে এক চাকরিজীবী। তিনি বলেন, জানতামই না তেলের দাম বাড়ছে। রাস্তায় বের হয়ে দেখি গাড়ি নেই। পরে ভেঙে ভেঙে বেশি টাকা খরচ করে আসলাম। আসলে সব কিছুর দাম বাড়ে কিন্তু বেতন বাড়ে না।

গতকাল শুক্রবার রাতে ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। নতুন দাম কার্যকর হয়েছে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, লিটারে ডিজেল ৩৪ টাকা, পেট্রল ৪৪ এবং অকটেনের দাম বেড়েছে ৪৬ টাকা।

প্রজ্ঞাপন বলা হয়েছে, প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রলের দাম ১৩০ টাকা। এর ফলেই ঢাকায় হঠাৎ করে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যায়।

 

Comment here