তাওহীদুল ইসলাম : যানজটে নাকাল রাজধানীর বাসিন্দাদের সহজ-সাশ্রয়ী যাতায়াতের সুবিধা দিতে হচ্ছে দেশের প্রথম মেট্রোরেল। একই সময়ে ভবিষ্যতের চাহিদা বিবেচনায় সরকার ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও আধুনিকায়ন করতে চাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সাবওয়ে বা আন্ডার মেট্রো নির্মাণের মাধ্যমে শহরজুড়ে প্রায় ২৪০ কিলোমিটার রেলপথ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এখন চলছে মাটির নিচে ট্রেন চালানোর সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ।
সমীক্ষাটি করছে স্পেনের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টেকনিয়া ওয়াই প্রয়েকটস এস.এ টিপসা। এজন্য প্রথমে চুক্তিমূল্য ধরা হয় ২১৯ কোটি ৪৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। কাজের এক পর্যায়ে অতিরিক্ত ৯৮ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকার প্রয়োজন হয়। সব মিলিয়ে এখন ৩১৭ কোটি টাকার প্রাক্কলন করা হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো হচ্ছে। ঢাকা শহরে মাটির নিচ দিয়ে ট্রেন চালানোর
উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এজন্য রাজধানীর উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম এলাকাজুড়ে রেল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। ট্রেন কে পরিচালনা করবে সে সিদ্ধান্ত আসবে সমীক্ষাপর্ব শেষে। আপাতত সরকারি অর্থে সমীক্ষা সম্পন্ন করতে জোর দিয়েছে সেতু বিভাগ। প্রকল্প পরিচালক কাজী মো. ফেরদৌস আমাদের সময়কে বলেন, রাজধানীজুড়ে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে এই ট্রেন। তবে প্রকল্পটি এখনো সমীক্ষার পর্যায়ে। রাজধানীর যানজট কমাতেই এই উদ্যোগ।
ঢাকা শহরের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রায় সাত হাজার ৯৫০ জন। মোট সড়কের দৈর্ঘ্য এক হাজার ২৮৬ কিলোমিটার, সড়কের ঘনত্ব ৯ দশমিক ০১ শতাংশ। অথচ একটি শহরে সড়কের আদর্শমান ২০-২৫ শতাংশ। ঢাকা শহরে বর্তমানে ফাঁকা জায়গা ৩ দশমিক ০৯ ভাগ অথচ থাকার কথা ১৫-৫০ শতাংশ। সড়কপথে ১০০ বাসে ঘণ্টায় ১০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারে। সাবওয়ে তথা আন্ডার মেট্রো নির্মাণ করলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল সম্ভব।
ঢাকা শহরে সাবওয়ে নির্মাণে ৯০ কিলোমিটার নেটওয়ার্কের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও প্রাথমিক ডিজাইন প্রণয়ন করা হবে। অবশিষ্ট ১৪৮ কিলোমিটার নেটওয়ার্কের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরে পরিচালনার কথা রয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। পুনর্গঠিত প্রকল্প অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ ধরা হয়। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে সাবওয়ে অবস্থান, এলাইনমেন্ট ও দৈর্ঘ্য নির্ধারণ; জিওটেকনিক্যাল ইনভেস্টিগেশন, সিমিক স্টাডি ও সার্ভে পরিচালনা, ট্রাফিক সার্ভে পরিচালনা, পরিবেশ ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত সমীক্ষা পরিচালনা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রাথমিক ডিজাইন প্রণয়ন ও এর ভিত্তিতে প্রাক্কলন প্রস্তুত করা।
Comment here