রোহিঙ্গা স্থানান্তর নিয়ে ‘ভুল ব্যাখ্যা’ না দেওয়ার আহ্বান - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

রোহিঙ্গা স্থানান্তর নিয়ে ‘ভুল ব্যাখ্যা’ না দেওয়ার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোহিঙ্গাদের জীবনমানের উন্নয়নে ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের একটি ‘আন্তরিক প্রচেষ্টা’। তাই এ বিষয়ে ‘ভুল ব্যাখ্যা’ না দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের এই স্থানান্তর নিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর প্রথম ধাপে আজ উখিয়ার শরণার্থী শিবির থেকে এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা সেখানে পৌঁছেছেন। রোহিঙ্গারা তাদের জীবনের মানোন্নয়নে স্বেচ্ছায় সেখানে গিয়েছেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং অবশ্যই তাদের সে দেশে ফেরাতে হবে। অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের এই নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ তার সর্বোচ্চটা করছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘এই পর্যায়ে এসে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একমাত্র বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হওয়া উচিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে দায়িত্ব নিয়ে এবং কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত হওয়া। আর সেটাই হবে এই সমস্যার একমাত্র স্থায়ী সমাধান। একইসঙ্গে আমরা বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক চেষ্টাকে খাটো করা এবং ভুল ব্যাখ্যা না করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

ভাসানচর নোয়াখালীর হাতিয়ার একটি দ্বীপ। এ দ্বীপে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে দুই বছর আগে এ দ্বীপে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।

এই চরে আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্ত করার কথা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সারা ব্ছর বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, মনোরম লেক এবং টেকসই স্থাপনা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ, কৃষি জমি, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, দুটি হাসপাতাল, চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদ, গুদাম, টেলিযোগাযোগ সেবা, থানা, বিনোদন ও শিক্ষা কেন্দ্র, খেলার মাঠ ইত্যাদি রয়েছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই বিবৃতিতে বলেছে, ‘কক্সবাজারে জনাকীর্ণ ক্যাম্পগুলোকে কিছুটা ফাঁকা করা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।  ১০ লাখ রোহিঙ্গার অস্থায়ী আবাসনের মধ্যে বছর বছর কয়েক হাজার নতুন শিশু জন্ম নিচ্ছে কক্সবাজারে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘হতাশায় নিমজ্জিত এই জনগোষ্ঠীর দীর্ঘ অবস্থানের কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খারাপ হতে থাকায় নিজস্ব পরিকল্পনা নিতে এবং নিজস্ব অর্থায়নে ভাসানচরকে তৈরি করতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সে কারণে সরকার সেখানে ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে।’

 

Comment here