জনি রায়হান : রাজধানীর সাইন্সল্যাবের মোড়ে আটটি গরুর চামড়া নিয়ে বসে আছেন হারুনুর রশীদ৷ আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বসে আছেন। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না তার কেনা চামড়াগুলো। সামান্য লাভের আশায় যে দামে চামড়াগুলো কিনেছেন, সে দামও বাজারে পাচ্ছেন না এই মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী।
দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে একজন ক্রেতা এসে বললেন, ‘কি রে ভাই ৩০০ টাকা করে সবগুলো দিবি। না দিলে বইয়া থাক।’
ওই ব্যক্তির কথায় কিছুটা বিরক্ত হলেন হারুনুর রশীদ। তবে কথার কোনো উত্তর দিলেন না তিনি। পরে জানা গেল ওই ব্যক্তি এর আগেও চামড়ার দাম করেছিল। কিন্তু এত অল্প দামে বিক্রি করবেন না তিনি।
হারুনুর রশীদদৈনিক মুক্ত আওয়াজ কে জানান, প্রতি বছরই তিনি কোরবানির ঈদে ঢাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে চামড়া কিনে সাইন্সল্যাবের এই অস্থায়ী হাটে বিক্রি করেন। তাতে অল্প কিছু টাকা লাভও হয় তার। কিন্তু এবার ৩০০ টাকার নিচে কোনো চামড়াই কিনতে পারেনি তিনি। অনেক চামড়া আবার ৫০০ টাকাতেই কিনেছেন। তবে এখন গড়ে চামড়ার মূল ব্যবসায়ীরা ৩০০ টাকা করে দাম বলছেন।
তিনি আরও জানান, হয়তো বা কেনা দামের চেয়েও কম দামে বাধ্যে হয়ে তাকে চামড়াগুলো বেচে দিতে হবে। কারণ আজকের দিন পার হলে এই চামড়ার আর এক পয়সাও মূল্য থাকবে না।

একই হাটে কবীর হোসেন নামের পুরান ঢাকার অপর এক ক্ষুদ্র চামড়ার ব্যবসায়ী বলেন, ‘এক সময় গরুর মাথার চামড়া কিনেছি ১০০ টাকায়। আর আজ গরুর চামড়া কিনলাম ১০০ টাকায়। কিছু করার নাই ভাই। কারণ ট্যানারিতে আমরা এর চেয়ে বেশি দামে বেচতে পারমু না।’
ভ্যানে করে চামড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বৃদ্ধ মকবুল। তিনি ও তার ছেলে মিলে ২৬টি চামড়া এনেছেন। কিন্তু ২০০ থেকে ২৫০ টাকার বেশি দামই হচ্ছে না এই বাজারে। মকবুল দৈনিক মুক্ত আওয়াজ কে বলেন, ‘আমরা নিজেরাও যখন গরুর চামড়া এত অল্প দামে কিনেছি তখন খুব খারাপ লেগেছে। কিন্তু নিজের চোখেই দেখেন চামড়া কিনে এখন কত বিপদে পড়েছি।’


Comment here