স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ‘স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আছেন, কিছু সংখ্যক ছাত্র আছেন, অন্যান্য কর্মচারী যারা আছেন তাদেরও ভ্যাকসিন দিতে হবে। সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।’

আজ বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে আয়োজিত সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

পরিকল্পনার চেয়েও বেশি করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহ করতে পারলে সরকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে বয়স শিথিলের বিষয়টি চিন্তা করবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন দিচ্ছি। এটা ভারতে ৬০ বছর বা এর বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন দেয়া হয়। আমাদের দেশে এটা অনেক কমিয়ে ৪০ বছরে নিয়ে এসেছি। ৪০ বছরে নিয়ে আসার কারণে আমাদের ৪ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হবে।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের হাতে যদি ভ্যাকসিন বেশি আসে, তাহলে বয়সের বিষয়টি চিন্তা করতে পারব। শিডিউলও পরিবর্তন করতে পারব। আমাদের সবসময় চেষ্টা থাকবে, নিশ্চিত হয়ে যেন আমরা কাজ করি। সেকেন্ড ডোজ যেন আমাদের হাতে থাকে। সেটা মাথায় রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘একটি মাস আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি। আমরা সফলতার সঙ্গে ইনশাআল্লাহ দিয়েছি। এই সফলতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাব। উনার নিবিড় তত্ত্বাবধানে ও গাইডেন্সে আমরা কাজ করেছি।’

‘ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রামে দেশবাসী সকলেই সন্তুষ্ট- এই পর্যন্ত যা হয়েছে। আপানারও (সাংবাদিক) সন্তুষ্ট, প্রধানমন্ত্রীও সন্তুষ্ট। বিদেশ থেকেও আমরা এই ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রামের সফলতার বিষয়ে অনেক সুনামের কথা পেয়েছি। আমরা এ সুনাম ধরে রাখতে চাই’, যোগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যত মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়েছি প্রত্যেকেই সুস্থ আছে, কোনো জায়গায় কোনো অঘটন ঘটেনি। এটা বিরাট অর্জন। আমরা আশা করি, এই অর্জনটি আমরা আগামীতেও ধরে রাখব।’

তিনি বলেন, ‘বিদেশিদেরও ভ্যাকসিন দিতে হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের তালিকা দিলে সেই অনুযায়ী আমরা ভ্যাকসিন দেব। বিভিন্ন প্রকল্পে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বিদেশিরা কাজ করছেন। সেই মন্ত্রণালয়গুলো যখন আমাদের লিস্ট দেবে, সেই লিস্ট অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।’

স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে কর্মরতদের ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘যেসব হোটেল আছে, পাঁচতারকা হোটেল এবং আমাদের যে কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র আছে- সেই হোটেলে যারা কর্মরত, তাদেরও আমরা ভ্যাকসিন দেয়ার ব্যবস্থা হাতে নিচ্ছি।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী জুন-জুলাই পর্যন্ত একটি প্রোগ্রাম নিয়ে আলোচনা করেছি। এরপর আবার আলোচনা হবে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা কীভাবে ভ্যাকসিন দেব।’

‘আমরা আশা করি জুন-জুলাই পর্যন্ত আমাদের যা অর্ডার আছে, আমরা কোভ্যাক্স থেকে যা পাব, সেটা মিলিয়ে আমাদের হাতে ৪ কোটি ডোজ হাতে থাকবে। এই চার কোটি ডোজ হাতে চলে আসবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাসে, সেই অনুযায়ী আমরা ভ্যাকসিন কার্যক্রম করব। যদি এর মধ্যে কোনো রকমের পরিবর্তন লাগে তাহলে সেই বিষয়টিও আমরা করব। আমাদের ডিজি অফিস এই বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিন বসে, আলোচনা করে ও সিদ্ধান্ত নেয়।’

ভ্যাকসিন কেনার জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন দাতাসংস্থা সাড়ে ৩ হাজার মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত হবে আমরা কতটুকু নেব, আমাদের কতটুকু প্রয়োজন আছে। সেটার ওপর সিদ্ধান্ত হবে। ইতোমধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলার যেটা বিশ্বব্যাংকে ছিল সেটা তো অনুমোদন হয়ে গেছে।’

বেসরকারিভাবে ভ্যাকসিন আনলে কী তা মানুষকে টাকা দিয়ে কিনতে হবে- এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়া ভ্যাকসিন বাংলাদেশ ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমোদন সাপেক্ষে বেসরকারিভাবে কেউ যদি আনতে চায় নিজ খরচে আনতে হবে। যে নেবে তাকেও নিজ খরচেই নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারিভাবে যেটা দেয়া হচ্ছে সেটা বিনামূল্যে, ভবিষ্যতেও যেটা দেয়া হবে বিনামূল্যেই দেয়া হবে।’

এ সময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার দেশে পর্যন্ত ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ৫০৫ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। টিকা নিতে রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৮০৩ জন বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

 

Comment here