হিজাব নিয়ে গুজব ছড়ানোয় প্রধান শিক্ষক কারাগারে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

হিজাব নিয়ে গুজব ছড়ানোয় প্রধান শিক্ষক কারাগারে

নওগাঁয় হিজাব ইস্যুতে দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

রোববার (১৭ এপ্রিল) নওগাঁ আমলি আদালতে-৩ (মহাদেবপুর) হাজির হয়ে ধরণী কান্ত জামিনের আবেদন জানালে বিচারক মো. তাইজুল ইসলাম জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ মামলায় এর আগে গ্রেফতার হওয়া দু’জন হলেন- কিউএম সাঈদ টিটো ও কাজী সামছুজ্জোহা মিলন।


এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল বাদী হয়ে থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতে টিটো এবং মিলনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ, কিউএম সাঈদ টিটো, কাজী সামছুজ্জোহা মিলন, বিদ্যালয়ের সভাপতি মাহমুদুল হাসান সুমন ও জেলার পোরশা উপজেলার গহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা সালাউদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও আরও অজ্ঞাত ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নওগাঁয় হিজাব ইস্যুতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ৭টি সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ ও সুপারিশ করা হয়েছে।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আমোদিনী পাল হিজাবের কারণে নয়; নির্ধারিত স্কুল ড্রেস না পরার কারণেই শিক্ষার্থীদের শাসন করেছিলেন।


একই দিনে বদিউল আলম নামে আরেক শিক্ষকও শাসন করেছিলেন শিক্ষার্থীদের। অথচ প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত শুধু শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে শোকজ করেন। এ ঘটনা তদন্ত কমিটির কাছে উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়েছে। শুধু শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে শোকজ করায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

এছাড়া প্রতিবেদনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের প্রহার করায় শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ও শিক্ষক বদিউল আলমের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে গুজব ছড়ানো প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত, শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ও ম্যানেজিং কমিটির মধ্যে দীর্ঘদিনের ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব চলছিল। যা গুজব ছড়াতে ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়; গুজব ছড়ানোর পেছনে স্থানীয় কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী ও সাধারণ মানুষের নাম উঠে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতেও সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

এ বিষয়ে মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এ মামলার এজাহারভুক্ত অপর দুই আসামিকে ও গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া মামলার তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় অপপ্রচারকারী এবং আরও কেউ জড়িত থাকলেও তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

Comment here