চার হাজার–তদন্ত নিয়ে চাপে দুদক কর্মকর্তারা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
জাতীয়

চার হাজার–তদন্ত নিয়ে চাপে দুদক কর্মকর্তারা

দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অনুসন্ধান বা তদন্তের নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়া নথির সংখ্যা প্রায় চার হাজার। এগুলো সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি না ব্যর্থতা তা যাচাই করছে কমিশন। তাই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক চাপে আছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

দুদক সূত্র জানায়, সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়া ওইসব অনুসন্ধান তদন্তের কাজ শেষ করার জন্য ৩১ মার্চ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন সংস্থার চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। এই সময়ের মধ্যে যেসব কর্মকর্তা কাজ শেষ করতে পারেননি তাঁরা ও তাঁদের উর্ধতন কর্মকর্তাদের ডেকে পাঠানো হয়। দুই কমিশনারকে সঙ্গে নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান। যৌক্তিক কারণ ছাড়া যারা ব্যর্থ হয়েছেন তাঁদের কঠোর ভাষায় সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে দুদক চেয়ারম্যান বলেছেন, কারও ব্যক্তিগত গাফিলতি বা ব্যর্থতার দায় কমিশন নেবে না। যারা ব্যর্থ হবেন তাদেরই এর দায় নিতে হবে।

দুদকের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান-তদন্তে ব্যর্থতা ও গাফিলতির অভিযোগ নতুন নয়। এ বিষয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদও একাধিকবার এ নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছেন।

দুদকে অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত যে কোনেো অভিযোগের অনুসন্ধানের জন্য নির্ধারিত আছে ১৫ কর্মদিবস। এরপর আরও ১৫দিন সময় পান অনুসন্ধান কর্মকর্তা। এই সময়ে কর্মকর্তারা অনুসন্ধানের অগ্রগতি জানিয়ে একটি অন্তবর্তীকালিন প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর কমিশনের পক্ষ থেকে অনুসন্ধানের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে নথিটি আকারও অনুসন্ধান কর্মকর্তার কাছে ফেরত পাঠানো হয়। এর পর থেকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই।

দুদকের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, একটি বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য এই সময়টি যথেষ্ট নয়। প্রয়োজনীয় নথিপত্র যাচাইবাছাইয়ের জন্য সেগুলো সংগ্রহ করতে অনেক সময় লেগে যায়। অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা, নথিপত্র সংগ্রহ করাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে অনেক সময় লাগে। ফলে অনিচ্ছাস্বত্বেও সময়সীমার মধ্যে অনুসন্ধাান শেষ করা য়ায় না। তবে তাঁরা এটাও স্বীকার করেন, এই সুযোগে অনেকে অনুসন্ধানে গাফিলতি করেন কিংবা ইচ্ছা করে অনুসন্ধান দীর্ঘায়িত করেন।

মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে দুদক কর্মকর্তারা শুরুতে সময় পান ১২০ কর্মদিবস। পরে এটা আর ৬০ কর্মদিবস বাড়ানোর সুযোগ আছে। এই সময়ের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শেষ করতে না পারলে কমিশন নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিতে পারে কমিশন।

এই আইনি কাঠামোর ভেতরে থেকে নির্দারিত সময়সীমা পার হয়ে যাওয়া অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্তাধীন মামলার সংখ্যা প্রায় চার হাজার। দুদকের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এই চার হাজার নথির মধ্যে প্রায় তিন হাজার নথি সত্যিকারভাবেই অনুসন্ধান বা তদন্তের আওতায় আছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবেই এগুলো নিয়ে কাজ করছেন। তবে বাকি এক হাজারের মতো নথি নিয়ে প্রশ্ন আছে। মূলত: সেসব নথিই কমিশনের মাথা ব্যথার বিষয়। এসব নথি যেসব কর্মকর্তা দেখছেন, তাঁদের যারা তদারক করছেন তাদের কঠোর নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

Comment here