আজ ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস। এ বছর দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- ‘স্টেপ উইথ রিফিউজি’। আর এমন সময় দিবসটি পালিত হচ্ছে, যখন বিশ্বজুড়ে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে- সঙ্গে বাড়ছে শরণার্থীর সংখ্যাও। ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা চাপ নিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি পালন হবে।
এসব রোহিঙ্গা চার দফায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেয়। গত ১৪ বছর ধরে প্রত্যাবাসন বন্ধ রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করায় এখন বাংলাদেশের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিন যতই গড়াচ্ছে, রোহিঙ্গা ক্যা¤েপ বাড়ছে অস্থিরতা।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, শরণার্থী দিবস উপলক্ষে কয়েকটি রোহিঙ্গা শিবিরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে খেলাধুলা, র্যালি, আলোচনাসভা ও রোহিঙ্গাদের জীবনে চিত্রপ্রর্দশন করা হবে। গতকাল বুধবার জেনেভায় ‘বৈশ্বিক প্রবণতা’ শীর্ষক প্রতিবেদন করা হয়।
এতে ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্র্যান্ডি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বৈশ্বিক প্রবণতা ভুল দিকেই যাচ্ছে। নতুন করে যুদ্ধ আর সংঘাত বাড়ছে। তৈরি করছে নতুন নতুন শরণার্থী, যারা আগের শরণার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। অথচ পূর্ববর্তীদের সমস্যার কোনো কিনারা হয়নি। পুলিশের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দুই বছরের কাছাকাছি সময়ে রোহিঙ্গা ক্যা¤পগুলোয় হত্যাসহ ২৩০টির মতো অপরাধ সংঘটিত হয়। তার মধ্যে ২৫টি মতো খুন হয়েছে।
এসব ঘটনায় আসামি করা হয়েছে দুইশ রোহিঙ্গাকে। ১৯৯০ সালে চার সদস্যের পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিলেন রোহিঙ্গা নারী নুর নাহার। তিনি মিয়ানমারের হাসসুরাতা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। বর্তমানে লেদা ক্যা¤েপর বাসিন্দা। তিনি বলেন, চার সদস্য নিয়ে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের ঝুপড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এখন আমার ঘরে ১০ জন সদস্য রয়েছে। কিন্তু ঘরের সংখ্যা বাড়েনি।
সাড়ে ২৭ বছর ধরে ওই ঘরেই বসবাস করতে হচ্ছে। আমার মতো হাজারো শরণার্থী পলিথিনের তাঁবুতে জীবন কাটাচ্ছে। দিল বাহার দেশে ফিরে যেতে চান। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র জোসেফ ত্রিপুরা বলেন, বাংলাদেশে নতুন পুরনো মিলে ৯ লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) মুহিব উল্লাহ বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে থেকে যাবে। এটা কিন্তু আমরা চাই না। বাংলাদেশ আমাদের বাড়ি নয়। আমরা চিরদিন বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে থাকতে চাই না। আমরা নিজ দেশে ফিরতে চাই; তবে নাগরিক অধিকার, ধন-স¤পদসহ সবকিছু দিতে হবে।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পাহাড়ের ঢালে হওয়ায়, বিশাল রোহিঙ্গা ক্যা¤েপ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা পুলিশের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে।
Comment here