একে একে ১০ লাশ উদ্ধার, আর যাওয়া হলো না বিয়ে বাড়িতে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সিলেট

একে একে ১০ লাশ উদ্ধার, আর যাওয়া হলো না বিয়ে বাড়িতে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। এই দশজনের মধ্যে ছয়জনই শিশু। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন এসব লাশ উদ্ধার করেন।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের মাছিমপুর গ্রাম থেকে ৩১ যাত্রী নিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি পেরুয়া গ্রামে যাওয়ার পথে কালিয়া কোটা হাওরের করচা বিলে প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাসে ও উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়।

ওই সময় নৌকায় থাকা ৪ শিশু ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে আরো ৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আশপাশের লোকজন নৌকা নিয়ে এগিয়ে এসে অন্য যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনকে উদ্ধার করেন।

এরপর বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আরো ২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন- উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের নোয়ারচর গ্রামের একই পরিবারের আফজালের ২ ছেলে আসাদ (০৬), সোহান (০২) ও তার স্ত্রী আজিরুন (৩০) এবং মাছিমপুর গ্রামের বাবুলের ছেলে শামিম (০২), বদরুলের প্রতিবন্ধী ছেলে আবির (০৩), পেরুয়া গ্রামের ফিরোজ আলীর ছেলে আজম (০২), মাছিমপুরের জাসদের মেয়ে শান্তা বেগম, মাছিমপুর গ্রামের আরজ আলীর স্ত্রী রহিতুন নেসা (৩৫), চনারচর ইউনিয়নের পেরুয়া গ্রামের নজিবুল্লাহর স্ত্রী করিমা বেগম (৭০) ও মাসিমপুর গ্রামের আরজ আলীর মেয়ে তাসমিনা (১১)।

দিরাই থানার ওসি কেএম নজরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় ডুবুরি দল ও এলাকার লোকজন ছোট ছোট নৌকা নিয়ে বিলে তল্লাশি চালিয়ে চার শিশুসন্তানের মরদেহ বিলের ভাসমান পানি থেকে উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসে।

বুধবার ভোরে বিলে আরও চারজনের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ছাড়া সকাল সাড়ে ৯টায় ও বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেন ডুবুরিরা।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের মাছিমপুর গ্রাম থেকে গ্রামের হাবলু মিয়ার পরিবারের লোকজন পার্শ্ববর্তী চরনাচর ইউনিয়নের পেরুয়া গ্রামে ফিরোজ মিয়ার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিল।

মঙ্গলবার বিকালে তারা ছাউনিবিহীন খোলা ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে মাছিমপুর থেকে পেরুয়া গ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ওই ট্রলারে ৩১ যাত্রী ছিলেন। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মাছিমপুর গ্রাম থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কাইল্যাকুটার করমা বিলে ট্রলারটি ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়।

আশপাশের গ্রামের লোকজন নৌকা নিয়ে অন্যদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত শিশুসহ আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

পরে সকাল সাড়ে ৯টায় ও বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

রফিনগর ইউপি সদস্য কুটি মিয়া জানান, এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ট্রলারডুবিতে ছয় শিশুসহ ১০ জনের মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে।

দিরাই উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব জানান, তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।

Comment here