এবার কুয়াকাটা পর্যন্ত রেল চালুর উদ্যোগ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

এবার কুয়াকাটা পর্যন্ত রেল চালুর উদ্যোগ

পর্যটনশহর কক্সবাজারে বাণিজ্যিকভাবে রেল যোগাযোগ শুরু হয়েছে গত ১ ডিসেম্বর থেকে। এর ফলে সুলভে ও স্বল্প সময়ে ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি ট্রেনে যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছে। এদিকে এ রুটের আগেই চালু হয়েছে রাজধানী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল। এবার সেই পথ এগিয়ে যাবে পর্যটনপ্রিয় কুয়াকাটা পর্যন্ত। প্রাপ্ত তথ্যমতে ২০২৯ সালের মধ্যে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর ও কুয়াকাটা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করবে সরকার।

পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন হয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ চলমান। এরই মধ্যে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করছে। এখন ভাঙ্গা জংশন থেকে বরিশালের দিকে যাবে রেল। এ পথে ট্রেন চললে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, বরগুনা ও পটুয়াখালীসহ ৭ জেলার ওপর দিয়ে ৩৬৯ কিলোমিটার রেলপথ তৈরি করতে হবে। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে ১৯টি স্টেশন ভবন করা হবে। সেগুলো হচ্ছে- ভাঙ্গা জংশন, বরইতলা, টেকেরহাট, মাদারীপুর, কালকিনি, গৌরনদী, উজিরপুর, বরিশাল বিমানবন্দর, বরিশাল, দপদপিয়া, বাকেরগঞ্জ, বদরপুর, পটুয়াখালী, ককুয়া, আমতলী, পায়রা পোর্ট, পায়রা পোর্ট ইয়ার্ড, লেমুপাড়া ও কুয়াকাটা। এ জন্য ১০টি নদীর ওপর ভায়াডাক্টসহ মেজর ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। সেগুলো হচ্ছে- কুমার, কালিঙ্গা, শিকারপুর, আমতলী, কীর্তনখোলা, পায়রা, পটুয়াখালী, আন্ধারমানিক, টিয়াখালী ও খাপরাভাঙ্গা নদী। এ জন্য ৪১ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রা ধরা হয়েছে ৪৯২৮.৯৬ মিলিয়ন ডলার। দেড় বছর সময় রাখা হয় টেন্ডারিং, ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন কাজে। আর সাড়ে ৪ বছর লাগবে নির্মাণকাজে। এর পর আরও এক বছর সময় থাকবে ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড হিসেবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান আমাদের সময়কে বলেন, বরিশাল, পায়রা বন্দর ও কুয়াকাটাসহ দক্ষিণাঞ্চলে রেলপথ করা হবে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এজন্য অর্থ সংগ্রহের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

জানা গেছে, প্রকল্পের অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়ায় টেন্ডার করা হয়নি। টেন্ডারের আগে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) পাঠানো হবে। অনুমোদন সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা। তবে বিশদ ডিজাইন সমীক্ষা এরই মধ্যে প্রকল্পের পরামর্শকের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের অধীনে ৫ হাজার ৬৩৮ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় পদ্মা নদীসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নতুন চারটি জেলা মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল অতিক্রম করে যশোরের সঙ্গে যুক্ত হবে রেল। পাশাপাশি বিদ্যমান ভাঙ্গা-পাচুরিয়া-রাজবাড়ী সেকশনটি পদ্মা সেতু হয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে। যদিও পুরো রেলপথটি এখনো চালু হয়নি। তবে পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে গেছে।

এবার বরিশাল রুটে ট্রেন চলাচলের পথ তৈরি হচ্ছে। এর ফলে কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দরের সঙ্গেও যুক্ত হবে রেল নেটওয়ার্ক। এর মাধ্যমে বরিশাল বিভাগের সঙ্গে ঢাকা, খুলনা, রাজশাহীসহ গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ট্রেন চলাচল আরও সহজ হয়ে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা- পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত পায়রা সমুদ্রবন্দর রেললাইনে যুক্ত হতে পারছে। এতে পণ্য পরিবহন অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। আর পর্যটকদের জন্য ট্রেনে চেপে কুয়াকাটা যাত্রাও সম্ভব হবে এ প্রকল্পের বদৌলতে।

Comment here