এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ

ইউসুফ আরেফিন : হাতিয়ার এসিল্যান্ড সারোয়ার সালামের বিরুদ্ধে ব্যাচমেটের সঙ্গে পরকীয়া, স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং সন্তানের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব না নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে অভিযুক্ত এ কর্মকর্তা এখনো পর্যন্ত স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ নিচ্ছেন না এবং তাদের ভরণ-পোষণ দিচ্ছেন না মর্মে অভিযোগ তুলেছেন তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার। তিনি বলছেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পাচ্ছেন না। তার অভিযোগ, গুটিকয় প্রভাবশালী কর্মকর্তার কারণেই সারোয়ারের শাস্তি হচ্ছে না।

সারোয়ার সালাম আমাদের সময়কে বলেন, তাকে ফাঁসানোর জন্য স্ত্রী খাদিজা পরিকল্পিতভাবে এই অপবাদ দিচ্ছে। একই ব্যাচের নারী ওই সহকর্মীর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। ওই সহকর্মীর বর্তমান কর্মস্থল কোথায় সেটিও তিনি জানেন না।

সচিবালয় সূত্র জানায়, সারোয়ার সালামের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগগুলো হলো- স্ত্রী-সন্তানকে অধিকার বঞ্চিত করা, স্ত্রীকে মানসিক নির্যাতন, অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক এবং স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার হুমকি। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গত ২৫ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তবে যৌতুক দাবি এবং প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করার দুুুটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মো. ছাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়। এ চিঠি পাওয়ার পরও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে এ পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থেকে নোয়াখালীর হাতিয়ায় এসিল্যান্ড হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

জানা গেছে, খাদিজা আক্তার তার স্বামীর নামে ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবং ২০ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের সঙ্গে নির্যাতনের বিভিন্ন ছবি এবং ফোনকলের অডিও রেকর্ডের ক্লিপও জমা দেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে ১৯ ডিসেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত। এই কমিটিই সারোয়ারের বিরুদ্ধে করা স্ত্রী খাদিজার ৬টি অভিযোগের মধ্যে চারটির প্রমাণ পেয়েছে।

এদিকে গত ৩ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনের মতামতে বলা হয়েছে, সারোয়ার তার স্ত্রী-সন্তানকে ভরণ-পোষণ না দিয়ে অধিকার বঞ্চিত করেছেন। স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি ফৌজদারি প্রকৃতির। যা যাচাইয়ের জন্য উপযুক্ত বিশেষজ্ঞ দ্বারা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তবে তালাক প্রদানের হুমকি ও পরকীয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের বিষয়টির সত্যতা রয়েছে।

Comment here