জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পার, আছে অভিযোগও - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পার, আছে অভিযোগও

মো. রুবেল ইসলাম তাহমিদ,মাওয়া থেকে : বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রুখতে সারা দেশে নৌ-চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। আগমী ৪ এপ্রিলের আগে দেশে কোথায় নৌ-যান চলাচল করবে না। তবু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মানদী পার হচ্ছেন ঘরে ফেরা মানুষ। খোলা আকাশের নিচে করছেন রাত যাপন, আবার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগও তুলছেন তারা।

নৌ-যান চলাচলের নিষেধাজ্ঞায় আছে শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ি রুটও। এই অঞ্চলের নৌরুটে ফেরিসহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বড় ট্রলারসহ অন্যান্য যান্ত্রিক বাহন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নির্দেশ অনুযায়ী নৌযান চলাচল বন্ধ করা হয়।

এই নির্দেশনার খড়্গ পরে সাধারণ যাত্রীদের ওপর। ১০ দিনের সাধারণ ছুটি পেয়ে যারা বাড়ি ফিরছেন বিপদে পড়েছেন তারা। কেননা, শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ি নৌরুটে আটকা পড়েছেন প্রায় ৫০ হাজার যাত্রী। গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এই রুটে পারাপার হতে গিয়ে আটকে পড়েন তারা। কিন্তু থামছেন না কেউ। খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করলেও সকালের সূর্য ওঠার সাথে সাথে তারাও নেমে পড়েছেন উত্তাল পদ্মা পারের মিশনে।

সবচেয়ে বেশি বিপদ নারী ও শিশুদের নিয়ে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিমুলিয়া ও মাওয়া এলাকায় সকাল থেকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় মাথাপিছু নৌকা ভাড়া দিয়ে পদ্মা পার হচ্ছেন অনেকেই। কোলের শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের শিশুদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাবা-মা পদ্মা পারের অপেক্ষায় বসে আছেন।

কথা বলতে গেলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন বাড়ি ফেরার অপেক্ষমান যাত্রীরা। তাদের ভাষ্য, গতকাল থেকে রাত জেগে, খেয়ে না খেয়ে তার অপেক্ষা করছেন, অথচ পুলিশ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

অপরদিকে স্থানীয়রাও দুষছেন পুলিশকে। সচেতন মহলের অভিযোগ, ছোট ছোট শিশু কোলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসাধু নৌকা-ট্রলারের মালিকরা বেশি টাকা লাভের বিনিময়ে পদ্মানদী পার করাচ্ছেন। অথচ এসব দেখেও কিছু করছে না লৌহজং থানা ও মাওয়া নৌ-পুলিশ।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে শিমুলিয়া ফেরিঘাটের ট্রাফিক ইনচার্জ (টিআই) মো. হিলাল উদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার পরও যাত্রী পার হচ্ছে। নিজের জীবনের ঝুঁকির কথা কেউ চিন্তা করছেন না। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত ২ লাখের মতো যাত্রী এই রুট দিয়ে পার হয়েছেন। রাতেও অপেক্ষায় খোলা আকাশের নিচে ছিলেন ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এখনও পার হচ্ছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) উপসহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আব্দুল আলিম এ ব্যাপারে বলেন, শিমুলিয়া ঘাটে গাড়ি ও যাত্রীদের চাপ বাড়ায় আমরা ১৪টি ফেরি চালু রেখেছি। যাত্রী পারাপার হচ্ছেন, রোগীর অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি অগ্রাধিকারে পার করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার ভ্যান পার করা হবে।

 

Comment here