নতুন উদ্যোক্তায় হবে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

নতুন উদ্যোক্তায় হবে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি

গোলাম রাব্বানী : করোনার প্রভাবে লকডাউন ও সাধারণ ছুটি থাকায় বিভিন্ন কলকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। ফলে প্রায় ১৪ লাখ লোক কর্মহীন হয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বাজেটে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদান ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা হবে বলে বাজেটে ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে প্রকৃত কর্মহীন মানুষের সংখ্যা ৪ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার। আর প্রায় ৫ লাখ প্রতিবছরে বেকার হচ্ছে। করোনাপরবর্তী এই বেকারত্ব দূর করে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়।

প্রতিবছর প্রায় ১৬ লাখ লোক শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। কিন্তু করোনার কারণে বর্তমানে সব প্রতিষ্ঠানেই লোক ও জনবল নিয়োগ দেওয়া স্থগিত রয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো চলতি বছরে নিয়োগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবছর ৪০ হাজার সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়াও স্থগিত হয়েছে। ফলে ১৬ লাখ নতুন বেকার সৃষ্টি হবে। যার প্রভাব পড়বে আগামী বছরগুলোয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে একজন বেকারকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তাকেই চাকরি প্রদানকারী হওয়ার পরামর্শ দেন অর্থনীতিবিদরা। এদিকে বাজেটে বিদেশ ফেরত শ্রমিক, প্রশিক্ষিত তরুণ ও বেকার যুবকদের ব্যবসা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও পিকেএসএফের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। এ লক্ষ্যে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ৫শ কোটি টাকার মূলধন সরকার বিতরণ করবে। যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট প্রোগ্রামের আওতায় উপযুক্ত উদ্যোক্তাদের স্বল্পসুদে ঋণ বিতরণ করবে। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে বেকার সংখ্যা প্রকৃত চিত্রে অনেক বেশি। বিশেষ করে শিক্ষিত বেকার অনেক বেড়েছে। এ মুহূর্তে ১৬ লাখ লোক কর্মসংস্থানে প্রবেশ করতে পারছে না। এরা আগামী বছর বেকার হবে। আর করোনার কারণে চাকরিচ্যুতরাও বেকার হবে। তাই আগামীতে এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিবেশ হবে। তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিকল্প নেই। তবে আগামীর কথা ভেবে নতুন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার সংখ্যা বৃদ্ধি করার কোনো বিকল্প নেই।

এ ছাড়া স্কিল ফর ইমপ্লয়মেন্ট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় ১৫ লাখ মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ৪ লাখ ২৮ হাজার প্রশিক্ষিত হয়েছে। যুব অধিদপ্তরের ‘ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি’র মাধ্যমে ২ লাখ ২৭ হাজার জনকে অস্থায়ী কর্মসংস্থান দেওয়া হয়েছে। দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে দেশে আরও ১২টি আইটি পার্ক ও ৮টি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হবে।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান বলেন, উদ্যোক্তা হতে প্রশিক্ষণ সাহায্য করে। কিন্তু নতুন উদ্যোক্তাদের পুঁজি থাকে না বিধায় তারা বিনিয়োগ করতে পারে না। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে।

নিরাপদ অভিবাসন প্রক্রিয়া ও প্রবাসীদের সুবিধার জন্য মাইক্রো চিপ কার্ডের মাধ্যমে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, বৈধ রিক্রটিং এজেন্সি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী বিধিমালা ২০২০ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া রেমিট্যান্স খাতে আগের মতোই ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা বহাল থাকবে।

Comment here