প্রবাসীদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে বাধ্য করবে সেনাবাহিনী - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

প্রবাসীদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে বাধ্য করবে সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। করোনা আক্রান্ত ইতালি, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কয়েক লাখ প্রবাসী দেশে এসেছেন। দেশে আসা প্রবাসীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে কিংবা হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশই তা মানছেন না। কেউ কেউ শ্বশুরবাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছে, কেউ করছেন বিয়ে। আর্থিক জরিমানা করেও কোয়ারেন্টিনে রাখা যাচ্ছে না তাদের। এবার প্রবাসীদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে বাধ্য করবে সেনাবাহিনী।

একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকার বিষয়টি জানিয়েছেন আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ।

তিনি জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে আজ মঙ্গলবার থেকে মাঠে থাকছে সেনাবাহিনী। তবে গুরুত্বপূর্ণ এই কাজে তাদের সঙ্গে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীও অংশগ্রহণ করবে।

আইএসপিআর পরিচালক বলেন, ‘পরম আস্থা থেকে সেনাবাহিনীকে যে দায়িত্বটা দেওয়া হয়েছে, সেই দায়িত্ব পালনে সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্য থাকবে, প্রথমে যে বিদেশ থেকে প্রত্যাবর্তন করেছেন, সেই নাগরিকগুলোকে তাদের স্ব স্ব অবস্থানে নির্ণয় করে তারা কোয়ারেন্টিনে আছে কিনা সেটা নিশ্চিত করব। এটা মূল কাজ।’

এক মাস আগে দেশে ফেরা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে এক মাস আগে যারা এসেছে, তাদের চিহ্নিত করব। তারপর যেটা করব, যেখানে সেলফ কোয়ারেন্টিনের জন্য যাদের নির্বাচন করেছেন জেলা পর্যায়ে তাদের পরিসংখ্যানটা আমরা নিচ্ছি। তারপর তারা কি সেলফ কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে পেরেছেন কিনা বা তাদের যে মনিটরিং আছে-সেটা কতটুকু কার্যকরী এবং সেইখানে আমাদের কী অ্যাসিসটেন্স রেন্ডার করতে পারব সেটা আমরা দেখব।’

যারা কোয়ারেন্টিনে না থেকে বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা করছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ রাখছেন, তাদের জন্য কোনো নির্দেশনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে লেফট্যানেন্ট কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ বলেন, ‘এই ক্ষেত্রে আমরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হব, যে দলগুলোতে আমরা জনপ্রতিনিধিদেরও সম্পৃক্ত করব। এবং আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসন সবাইকে নিয়ে সমন্বিত দল হয়ে আমরা এটাকে নিশ্চিত করব।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘সম্ভব না হলে আমরা ‘‘এনফোর্স’’ করব’। এনফোর্স করবেন বলতে? উপস্থাপিকার এমন প্রশ্নে এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘মানে আমরা নিশ্চিত করব। নিশ্চিত করব যে যেভাবে বলা হয়েছে যে জায়গাগুলো ইয়া করা হয়েছে, যেখানে যাওয়া উচিত না, এ সময়ে একটু..।’

প্রয়োজনে বাধ্য করা হবে, মানে তাদেরকে নির্দেশ মানতে বাধ্য করা হবে- উপস্থাপিকার এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,  ‘জ্বি, জ্বি । মানে ওইভাবে বাধ্য বলা যেতে পারে তবে সেটা কোনো জোর-জবরদস্তি না। মানে আপনারা নিশ্চিত করবেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, `নিশ্চিত করব, জ্বি, জ্বি।’

এর আগে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আজ থেকে সেনাবাহিনী নিয়োজিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ সময় বিদেশ থেকে ফেরত আসা ব্যক্তির অবস্থান নির্ণয় ও তাঁদের নিজ নিজ অবস্থানে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করাই হবে সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্য। গতকাল সোমবার আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ লক্ষ্যের কথা বলা হয়। গতকাল রাতে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সেনাবাহিনীর গৃহীত কার্যক্রমের বর্ণনা দেওয়া হয়।

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোয় সামাজিক দূরত্ব এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য বেসরকারি প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী নিয়োজিত হবে। বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোয় সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত হবে।

Comment here