মহাসড়কে যানজট নেই, বৃষ্টিতে কিছুটা অস্বস্তি - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ঢাকাসমগ্র বাংলা

মহাসড়কে যানজট নেই, বৃষ্টিতে কিছুটা অস্বস্তি

চাঁদ দেখা স্বাপেক্ষে আগামী বুধবার কিংবা বৃহস্পতিবার উদযাপিত হবে ঈদুল ফিতর। আজ সোমবার শেষ কর্মদিবস। নাড়ির টানে মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। অনেকে পরিবার পরিজন আগেই পাঠিয়ে দিয়েছেন।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক। ঈদসহ যেকোনো উৎসবের ছুটিতে এই সড়কের টাঙ্গাইলের অংশে যানজট আর ভোগান্তি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এবারের মহাসড়কের চিত্র একেবারে ভিন্ন।

যানজটমুক্ত স্বস্তিতেই ঈদে ঘরমুখো মানুষ যাতায়াত করছেন। টাঙ্গাইলের অংশে ৬৫ কিলোমিটার সড়কে যানজট নিরসনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর প্রায় পৌঁনে ৭০০ সদস্য নিরলসভাবে কাজ করছেন। উত্তরবঙ্গসহ দেশের কমপক্ষে ২৩টি জেলা যানবাহন চলাচল করে এই মহাসড়কে।

আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত যানজটের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। সরেজমিনে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়, টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস, আশেকপুর বাইপাস, করটিয়া হাট বাইপাস ও করাতিপাড়া মোড়ে গিয়ে দেখা যায় যানবাহনগুলো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। তবে বৃষ্টির কারণে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও যান চালকরা।

এদিকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা কিছুটা ভিন্ন চিত্র। গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে বাসস্ট্যান্ড সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় গর্ত এবং কাদা। ফলে রাস্তার দুপাশে অপেক্ষমান যাত্রীরা দাঁড়াতে কষ্ট পাচ্ছেন। এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে এসে গাড়ির গতি একেবারে কমে যায় । এতে সৃষ্টি হয় ধীরগতি। আবার দেখা যায় মহাসড়ক অনেক সময় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় কতর্ব্যরত টাঙ্গাইল ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট প্রণব কুমার সরকার বলেন, ‘আমি সকাল ৬টা থেকে মহাসড়কে আছি। দুপুর পর্যন্ত কোনো যানজট হয়নি। তবে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে গর্ত ও কাদার জন্য গাড়ির গতি কমে যায় এবং কিছুটা ধীরগতি সৃষ্টি হয়।’

চন্দ্রা থেকে থেকে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে আসা বাসযাত্রী ওসমান গণি বলেন, ‘আমি এত ঘণ্টায় এসেছি। রাস্তায় কোনো যানজট নেই। পুলিশ অনেক ভালো ডিউটি করছেন।’

উত্তরবঙ্গগামী হানিফ পরিবহনের চালক মকবুল হোসেন বলেন, ‘মহাসড়ক যানজট নেই। কিন্তু বৃষ্টির কারণে কিছুটা ভোগান্তি আছে। তবে বিকেলের দিকে গাড়ির চাপ বাড়বে।’

গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম কাউসার বলেন, ‘ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের করটিয়া মাদারজানি ব্রিজ থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত আমাদের এলাকায় কোনো যানজট নেই।’

বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ওসি মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব এলাকা থেকে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আমার ১৪ কিলোমিটার কার্যপথ। মহাসড়কে যানজট নেই, একবারে স্বাভাবিক।’

ওসি আরও বলেন, ‘রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায় হয়েছে এক কোটি ৯৮ লক্ষ ৪৪ হাজার ৯৬৯০ টাকা। ২৪ হাজার ৫৬৭ টি যান অতিক্রম করেছে।‘

বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। ঈদে সেটা বেড়ে দুই থেকে তিন গুণ হয়।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ টাঙ্গালের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিমুল এহসান বলেন, ‘এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বৃষ্টির কারণে কিছু কিছু গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ যে যে স্থানে দেখিয়ে দিচ্ছে আমরা সেসব স্থানে সাময়িক মেরামত করে দিচ্ছি। যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে।’

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদুর রহমান মনির বলেন, ‘অন্য যেকোনো বারের তুলনায় এবার মানুষ অত্যন্ত স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন। মহাসড়কে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে। যানজট নিরসনে হুণ্ডা, মোবাইল ৩৫টি, দুটি ওয়াচ টাওয়ার, কন্ট্রলরুম, বাশকল এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আশা রাখি ভোগান্তি ছাড়াই নিজ নিজ স্থানে পৌঁছাতে পারবেন।’

Comment here