মার্চ থেকে ডিজিটাল হচ্ছে বিমান টিকিটিং : প্রধানমন্ত্রী - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

মার্চ থেকে ডিজিটাল হচ্ছে বিমান টিকিটিং : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : মার্চ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ডিজিটালাইজড হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বলাকা ভবনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পেসেঞ্জার সার্ভিস সিস্টেমটাকে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করে দিচ্ছে। অনলাইনে টিকিটিং, রিজার্ভেশন, বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর চেক ইন-সবকিছু অনলাইনে হবে। এটা আমাদের প্রবাসীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। আজকে আন্তর্জাতিকভাবে পৃথিবীর সব দেশে এই ব্যবস্থাটা আছে। আমরা এ ক্ষেত্রে একটু পিছিয়ে ছিলাম।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যতবার দেশের বাইরে গিয়েছি, সব সময় আমার একটা লক্ষ্য ছিল যে, নিজেদের বিমান ব্যবহার করব। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা আছে, তখন বিমানের কী বিধ্বস্ত অবস্থা ছিল। ১৯৯৬ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি, তখন উদ্যোগ গ্রহণ করি। যদিও তখন আর্থিকভাবে অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল, তার মাঝেও আমরা চেষ্টা করেছিলাম বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উন্নয়নে আরও কিছু বিমান বহরে যুক্ত হোক। আমাদের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আরও চালু হোক, সেভাবে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। মাত্র পাঁচ বছর হাতে সময়। সেভাবে কাজ করে যেতে পারিনি। তবুও আমরা কাজ করেছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দ্বিতীয়বার আমি যখন সরকারে আসি, লক্ষ্য করি, বাংলাদেশ বিমান নিউইয়র্ক, ব্রাসেলস, প্যারিস, ফ্রাংকফুর্ট, মুম্বাই, নারিতা এবং ইয়াঙ্গুন রুটে যে চলাচল করতো, সেগুলো সব লোকসান দেয় এবং একে একে সব বন্ধ করে দিতে হয়। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে এই যে জরাজীর্ণ একটা বিমান, এটার উন্নয়নে কাজ করি। এমন কী একটা গানও শোনা যেতো না। যদি আমি জানালার সিটে বসতাম, তখন তো ঝরঝর করে পানি পড়তো। কোনমতে কাপড় দিয়ে সে পানি বন্ধ করা হতো। এমনই আমাদের বিমানের দুর্দশা ছিল। আমি পাইলটদের সব সময় ধন্যবাদ জানাতাম যে, এ ধরনের ঝরঝরা অবস্থায় সাহস করে তারা বিমান চালাচ্ছে।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘সরকারে এসে আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে বর্তমানে ৪টি বৃহৎ পরিসরের বোয়িং-৭৭৭-৩০০-ইআর, চতুর্থ প্রজন্মের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত ৪টি ৭৮৭-৮ ও ২টি ৭৮৭-৯-সহ মোট ৬টি ড্রিমলাইনার, ৬টি ৭৩৭-৮০০ এবং ৫টি ড্যাশ-৮-৪০০ উড়োজাহাজ রয়েছে। এই ২১টি উড়োজাহাজের মধ্যে ১৮টি উড়োজাহাজই বিমানের নিজস্ব মালিকানাধীন। অনেকগুলো আমাদের সময়েই সংগ্রহ বা ক্রয় করা।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং দক্ষ জনবল দ্বারা অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং গিয়ার রিপ্লেসমেন্ট এবং বোয়িং ৭৮৭ এর সি-চেক কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এতে প্রচুর অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। বাংলাদেশে গমনাগমনকারী সব এয়ারলাইন্সকে বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা প্রদান করে থাকে। একটি দক্ষ এবং অত্যন্ত কার্যকর গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং ইউনিট গড়ে তোলা হচ্ছে। চতুর্থ প্রজন্মের বিমান সংযুক্ত হওয়ায় যাত্রীদের আকাশে ওয়াইফাই সুবিধাসহ বিভিন্ন প্রকার ইনফ্লাইট বিনোদন সেবা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিমানবন্দরসমূহে পাশ্বর্বর্তী শহরের যাত্রীদের আরামদায়ক গমনাগমনের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মনোরম কোচ সার্ভিস চালু করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। করোনার সময়েও কিন্তু এর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়নি। কাজ অব্যাহত রয়েছে। উচ্চশক্তি সম্পন্ন রাডার আমরা স্থাপন করব, সেই ব্যবস্থা নিয়েছি। যেটা আমাদের বিমান চলাচলে, শুধু আমাদের বিমান না, বাংলাদেশের আকাশ সীমা দিয়ে অন্য যত দেশের বিমানই যাক, তার সবটির জন্য সেটা আমরা করে দিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আমরা সম্প্রসারণ করে সেটাকে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। কারণ আমাদের এই বিমানটা আন্তর্জাতিক রুটের মধ্যে পড়ে। যে জন্য এই জায়গাটা গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগটা আরও বাড়ানোর দরকার।’

‘মালদ্বীপে ইতোমধ্যে বেসরকারি খাত থেকে বিমান যাওয়া শুরু করেছে। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সও আমি মনে করি, এই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে সব জায়গায় লাভ-লোকসান খতিয়ে দেখার দরকার নেই। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা এবং কার্গো পরিবহন—এটা একান্তভাবে দরকার’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

Comment here