সব ব্যথা চেপে রেখে দেশের কাজ করছি - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
জাতীয়

সব ব্যথা চেপে রেখে দেশের কাজ করছি

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জীবনের সব ব্যথা, সবকিছু বুকে চেপে রেখে আমি দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি শুধু একটা কারণেÑ আমি চাই দেশটা যেন এগিয়ে যায়। বাংলাদেশের মানুষ, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী মানুষ যেন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। আমি কারও প্রতি বিদ্বেষ নিয়ে চলি না বা প্রতিশোধ নিতেও যাইনি। যেখানে অন্যায় হয়েছে, ন্যায় করার চেষ্টা করেছি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্য ও রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যখনই বাংলাদেশের মানুষ একটু সুখের মুখ দেখতে শুরু করল তখনই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করল। বাংলাদেশের মানুষ হারিয়েছে তাদের নেতাকে, আমি ও আমার বোন হারিয়েছি বাবাকে। শুধু আমরা নয়, ১৫ আগস্টে স্বজনহারা অনেকেই হয়েছেন। শুধু হত্যা করা হয়নি। বিচারের হাত থেকে খুনিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। সামরিক অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল, খুনিদের সবাই উৎসাহিত করেছেন। খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কর্নেল রশিদকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসায়। জেনারেল এরশাদ খুনি ফারুককে পার্টি করতে দেয়। সে ফ্রিডম পার্টি করে এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পায়।

সংসদ নেতা বলেন, কী যন্ত্রণা নিয়ে আছি! তারপরও সব ব্যথা, সব কষ্ট সহ্য করে একটি জিনিসই শুধু চিন্তা করেছি, আমার বাবা দেশটা স্বাধীন করেছেন যে মানুষের জন্য, সেই সাধারণ মানুষের জীবনটা যেন সুন্দর হয়। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের খুনিদের বিচার করেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে সক্ষম হয়েছি। সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি, চালিয়ে যাব। দেশটা যাতে সুন্দরভাবে গড়ে ওঠে সেজন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

ধর্ষকরা পশুরও অধম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা শিশু-কিশোরীদের ধর্ষণ করে তারা মানুষ নামে পশু, এরা পশুরও অধম। তাদেরও তো মা-বোন-মেয়ে আছে। এমন জঘন্য চরিত্রের মানুষ কীভাবে হতে পারে? জঙ্গিবাদ-মাদক-ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। দেশবাসীও যেন এদের ধরিয়ে দিতে সহযোগিতা করেন।

রোজায় দ্রব্যমূল্য প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, রমজান এলেই অনেকে অনেক খেলার চেষ্টা করে। কেউ যেন গুজবে আতঙ্কিত না হয়ে পড়েন। আমরা এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি। আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। তিনি বলেন, চীন থেকে যেসব কাঁচামাল আসছে সেগুলোর ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সতর্ক। চীনে সৃষ্ট সমস্যার কারণে বিকল্প পথ খুঁজছি, তাই আতঙ্কের কিছু নেই।

মশার উপদ্রব নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতার বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার বর্ষা আসছে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে, বাড়িঘর পরিষ্কার রাখতে হবে। ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখতে পারলে মশা থাকবে না। পরিষ্কার না রাখতে পারলে মশা তো মুখে ঢুকবে।

ব্যাংকে টাকা নেইÑ বিরোধীদলীয় নেতার এমন বক্তব্যের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, এই মুহূর্তে ব্যাংকে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়নের ওপরে, কাজেই চিন্তা নেই। টাকা যদি না-ই থাকে, কাজ করছি কীভাবে। অনেক উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েছি।

তিনি বলেন, অবশ্যই এখন সিঙ্গাপুর থেকে অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়ে আছিÑ এটা দাবি করতে পারি। আমাদের অনেক বড় দেশ, সিঙ্গাপুর ছোট একটি দেশ। বিরোধী দল নেই, শৃঙ্খলার মধ্যে চলে, রাজনৈতিক পরিবেশ ভালো। আমাদের দেশে সন্ত্রাস-অগ্নিসন্ত্রাস-খুনখারাবি হয়; অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হয়।

Comment here