সিলেটে ছুটে আসলেন মাশরাফি ভক্তরা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

সিলেটে ছুটে আসলেন মাশরাফি ভক্তরা

সাইফুল ইসলাম রিয়াদ,সিলেট থেকে : বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি মোর্ত্তজার শেষ দিন বলে কথা। এরপর থেকে তাকে মাঠে আর দেখা যাবে না নেতার ভূমিকায়। সারা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে আছে তার অগণিত ভক্ত। তারা কী বসে থাকতে পারেন প্রিয় অধিনায়কের বিদায়ের দিনে? না পারেননি কেউ, তাইতো ঘোষণার পরেই সারাদেশ থেকে সিলেটে ছুটে আসেন অগণিত ভক্ত।

গতকাল বৃহস্পতিবারই ঘোষণা দিয়েছিলেন মাশরাফি, আজ শুক্রবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অধিনায়ক হিসেবে শেষ দিন। এই ঘোষণার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় ভক্তদের হাহাকার, হৃদয় ছোঁয়া গল্প। অনেক ভক্ত ছুটে আসেন সিলেটে ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকতে।

শুক্রবার মানেই সিলেটে ছুটির আমজে। দোকান-পাট বন্ধ, সবাই ব্যস্ত হয়ে যায় নিজেদের ব্যক্তিগত কাজে। শহরে ভিড়-ভাট্টা খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু আজ যেনো ভিন্নরকম চিত্র। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ভিড় চোখে পড়ার মতো। পানসি রেস্তোরাঁয় দুপুরের খাবার খেতে গিয়ে দেখা হলো একটি দলের সঙ্গে। সবাই বাংলাদেশের জার্সি পরিহিত, এসেছেন নারায়াণগঞ্জ থেকে।

মাঠে প্রবেশের মুখে দেখা হয় আরেকটি দলের সঙ্গে, তারা এসেছেন নরসিংদী থেকে। ঢাকা থেকে এসেছেন অনেকেই। বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ) থেকে এসেছেন ২৫ জনের একটি বড় দল। ‘ধন্যবাদ অধিনায়ক’ লেখা বিশাল ব্যানার নিয়ে তারা স্টেডিয়ামে প্রবেশের পর থেকেই মাতিয়ে রেখেছেন।

সিএনজিতে আসতে আসতে কথা হলো ছোট একটি দলের সঙ্গে, তারা এসেছেন ঢাকা থেকে। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারা। মাশরাফি অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পরেই সিদ্ধান্ত নেন সিলেটে আসবেন। এরপর তিনজন বেরিয়ে পড়েন, রাতের বাসে উঠে সকালে পৌঁছান সিলেটে। সারাদিন এদিক-ওদিক ঘুরাঘুরি করে দুপুরে স্টেডিয়ামের দিকে আসছিলেন তারা। প্রিয় অধিনায়কের শেষ ম্যাচ নেতৃত্ব দেওয়া দেখে আবার রাতের বাসে ফিরে যাবেন ঢাকায়।

দূর থেকে আসা সবার গল্প এমনই। কেউ এসেছেন ভোরে আবার কেই কাক ঢাকা ভোরে বাসে উঠে দুপুরে পৌঁছেছেন। ভীষণ ক্লান্ত হলেও চেহারায় স্বস্তির চাপ, প্রিয় অধনায়কের খেলা দেখতে পারবেন বলে।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুর ২টায় খেলাটি শুরু হয়। টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিম্বাবুয়ে। মাশরাফি ৮৮ ম্যাচে টস করে জিতেছেন ৪৩টিতে আর হেরেছেন ৪৫টিতে। এই সিরিজের প্রথম দুটিতে টসে জিতলেও আজ শেষ ম্যাচে এসে টস ভাগ্য সহায় হয়নি তার।

২০১০ সালের ৮ জুলাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় অধিনায়ক মাশরাফির যাত্রা, আজ ৬ মার্চ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শেষ হবে প্রায় ১০ বছরের চড়াই-উতরাইয়ের কাহিনি।

অধিনায়ক হিসেবে মাশারাফি ৮৭ ম্যাচ খেলে ১০১ উইকেট নিয়েছেন। ওভার প্রতি দিয়েছেন ৫ দশমিক ১২ রান। সেরা বোলিং ফিগার ২৯ রানে চার উইকেট। অধিনায়ক না থাকা অবস্থায় ১৩২ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ১৬৮ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ২৬ রান দিয়ে ছয় উইকেট। ওভার প্রতি দিয়েছেন ৪ দশমিক ৭১ রান করে।

তার নেতৃত্বেই এক দিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশ সাফল্য দেখেছিল। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের পর ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়অধিনায়ক হিসেবে মাশারাফি ৮৭ ম্যাচ খেলে ১০১ উইকেট নিয়েছেন। ওভার প্রতি দিয়েছেন ৫ দশমিক ১২ রান। সেরা বোলিং ফিগার ২৯ রানে চার উইকেট।

Comment here