২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বাজারে ইলিশের সয়লাব - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বাজারে ইলিশের সয়লাব

মো. রুবেল ইসলাম তাহমিদ,লৌহজং প্রতিনিধি : সখের রুপালি ইলিশে সয়লাব মাওয়া পদ্মা পাড়ের মৎস্য আড়ত। গেল ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর ক্রেতারা ইলিশ কিনতে ভিড় করছেন এখানে। নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ বৃহস্পতিবার লৌহজং উপজেলার মাওয়া মৎস্য আড়তে দেখা গেছে এমন চিত্র!

আড়তটি রাজধানীর ঢাকার নিকটবর্তী হওয়ায় আশপাশের জেলা থেকে পাইকারদের পাশাপাশি সৌখিন ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। তবে পদ্মার এ ইলিশের দাম বেশ চড়া। এক কেজির সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৩শ থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত। আড়তগুলো এখন ইলিশে সয়লাব হলেও ক্রেতা বেশি থাকায় দামে অনেক বেশি। প্রকারভেদে কেজিপ্রতি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬শ থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত। এতে জেলে ও আড়তদাররা খুশি হলেও ক্রেতারা বিপাকে।

মাওয়া মৎস্য আড়তের সেক্রেটারি মো. চাঁন মিয়া মাদবর বলেন, ‘গতকাল থেকে আড়তে যেভাবে ইলিশ আসছে তাতে বোঝা যাচ্ছে- পদ্মায় অনেক ইলিশ আছে। পাইকারদের পাশাপাশি সৌখিন ক্রেতারাও আসছে বহু। তবে, কেউ খালি হাতে যাই নাই, সবাই ইলিশ নিয়া গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজকে অনেক ক্রেতা থাকায় মাছের দাম বেশি। ক্রেতারা এতদিন ধরে ইলিশ কিনতে না পেরে আজকে আশা করে আসছে, ইলিশ কিনবে তাই দামও চড়া।’

মুন্সীগঞ্জ মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য, বলছে, গেল মৌসুমে ১৯শ’ ৭২ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। এ বছর এর চেয়েও বেশি ইলিশ উৎপাদনের আশা করছেন তারা। মাওয়ায় বড় ইলিশ ১৩ শ’ থেকে ১৫ শ’ টাকায়। এক কেজির ইলিশ ১০০০ থেকে ১২শ’ টাকায়। ৭শ’ থেকে ৮শ’ গ্রামের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ৪শ’ থেকে ৫শ’ গ্রাম ইলিশ ৬শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত বছরের চেয়ে এবার বেশি অভিযান চালানো হয়েছে। তবে ইলিশ নিধনের দায়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে গত বছরের চেয়ে অনেক কম সংখ্যক জেলেকে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এ বছর ২২ দিনে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে সফলতা ৮০ ভাগের বেশি হবে। এ বছর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং ও মেঘনায় বেপরোয়াভাবে ইলিশ নিধন করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের সব সময় নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

আড়ত সরানোর নির্দেশ

এদিকে, মাওয়ার ঐতিহ্যবাহী এই মাওয়া মৎস আড়তটি সরিয়ে নিতে হবে ৫ নবেম্বরের মধ্যে। পদ্মাসেতুর কাজের জন্য সেতু বিভাগ আড়তটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আড়তদাররা।

মাওয়া মৎস্য আড়তের আড়তদার মো. আ. মজিদ শেখ ও হামিদুল ইসলাম জানালেন, ‘প্রায় ৫০ বছর ধরে এখানে আড়তটি রয়েছে। আমারা সরকারের থেকে লিজ নিয়ে এখানে আড়তদারি করছি দীর্ঘদিন। গেল প্রায় ৫ বছর হয় পদ্মা সেতুর নদী শাসনের জন্য আমাদের মৎস্য আড়তটি একোয়ার করে। ২০০ মিটার উত্তরে অস্থায়ী জায়গায় আড়িতটি চালিয়ে আসছি। হঠাৎ করে আমাদের ১৫ দিন সময় দিয়ে ৫ নভেম্বরের মধ্যে উঠে যেতে বলেছে। আমাদের এত বড় একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১৫ দিনের মধ্যে কীভাবে উঠে যাবে, আমরা বুঝতে পারছি না।’

এখানকার আড়তদাররা জানান, ‘আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়ার সময় দিয়ে আমাদের অন্য কোথাও ট্রান্সফার করুক, রাজি আছি। আমরা পদ্মাসেতুর পক্ষে। আমরা সেখানে যেতে মানা নেই। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে এই মাছের আড়তে কমপক্ষে ৬ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হইছে।’

 

Comment here