৩২ বছর বয়সীরা ছাত্রদলের নেতৃত্ব পাবেন - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
রাজনীতি

৩২ বছর বয়সীরা ছাত্রদলের নেতৃত্ব পাবেন

প্রায় পাঁচ বছর পার হওয়ার পর নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে ছাত্রদলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে লজ্জাজনক ভোটপ্রাপ্তির পর ছাত্রদলের রুগ্নদশা বিএনপির হাইকমান্ডের নজরে আসে। এর পরই শিক্ষার্থীদের দিয়ে কমিটি করে ছাত্র সংগঠনটিকে ‘আদু ভাই’ মুক্ত করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছাত্রত্বের বিষয়টি শিথিল করে অনূর্ধ্ব ৩২ বছর বয়সীদের নেতৃত্বে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ত্যাগী ও আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রাখা নেতারাই নতুন কমিটিতে অগ্রাধিকার পাবেন।

অনেক আগেই ছাত্রত্ব শেষ হওয়া নেতাদের বাদ দেওয়া ছাড়াও ছাত্রদলের কমিটি অন্যবারের মতো ঢাউশ না করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি হাইকমান্ড। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চান এবার ১০১ সদস্যের কমিটি হোক। ডাকসু নির্বাচনের পর তিনি ছাত্রদলের সাবেক শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নতুন কমিটি নিয়ে স্কাইপির মাধ্যমে কয়েক দফা মতবিনিময় করেন। তবে তার সিদ্ধান্ত বদলাতে সাবেক ও বর্তমান কয়েক নেতা মাঠে নেমেছেন। তারা তাদের অনুসারীদের কমিটি আনতে ছাত্রদলের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনের বর্তমান কমিটির কয়েক নেতা।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্রদলের কমিটি হচ্ছে। আহ্বায়ক না পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। তিনি আরও বলেন, ছাত্রদের মধ্য থেকেই কমিটি করার চিন্তা রয়েছে। পদপ্রত্যাশীদের সম্পর্কে খোঁজখবরও নেওয়া হচ্ছে। যাদের আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা ছিল, নির্যাতন ও মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় এমন নেতাদেরই বেছে নেওয়া হবে। ছাত্রদলের কমিটি করার ক্ষেত্রে কয়েকটি সিন্ডিকেটের প্রভাব কাজ করে।

ফলে কমিটিতে যোগ্যতার চেয়ে লবিংকেই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। এবার সম্ভাব্য নেতাদের বেশিরভাগই চান ছাত্রদল সিন্ডিকেটমুক্ত হোক। সংগঠনে বিরাজমান ‘ভাইতন্ত্র’ সরানো গেলে মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতার বিচারে নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে বলে তাদের বিশ্বাস। সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে সংগঠনের সাবেক কয়েকজন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দিয়ে সার্চ কমিটি করা হয়েছে। তারা ত্যাগী ও যোগ্যদের বিষয়ে জানাবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে।

সূত্র জানায়, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ২০০৫-০৬, ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষকে গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটির ক্ষেত্রে ছাত্রত্ব থাকা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় কমিটি ১০১ সদস্যের করার কথা ভাবনায় থাকলেও পরে যোগ্যতার ভিত্তিতে আরও কিছু পদ যোগ করার কথাও ভাবা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জেলা কমিটিগুলোর পদসংখ্যাও অস্বাভাবিক যেন না হয় সেদিকে নজর রাখা হবে। এদিকে দলের ক্রান্তিলগ্নে ভূমিকা রাখা বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতা বলছেন, হঠাৎ করে ‘জুনিয়র কমিটি’ হলে কর্মী সংকটে পড়বে ছাত্রদল।

এ ছাড়া রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে অনেক ছাত্রনেতার। তারা বলছেন, হঠাৎ করে দীর্ঘদিনের জট একবারে শেষ করলে অনেক নেতার রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে যাবে। এ নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে বিএনপির প্রচার সম্পাদক এ্যানী বলেন, ছাত্রদলের কমিটি থেকে বাদ পড়াদের যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে পদায়ন করা হবে।

Comment here