ক্রীড়া প্রতিবেদক : ‘প্রথম’ চাওয়া ও পাওয়ার মাঝে অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করে। জিম্বাবুয়েকে দেশের মাটিতে এনে ক্রিকেটের তিনটি ফরম্যাটেই বাংলাদেশ জয় দেখেছে যা বালাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম। একমাত্র টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে জয়ের পর দু্ইটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও জিতে বাংলাদেশ নতুন উচ্চতায় স্থান করে নিল।
নাইম ও লিটনই পারতেন। না হওয়ায় কি আর করা। তবে পরে সৌম্য ও লিটন মিলে বাংলাদেশকে নয় উইকেটের জয় এনে দিলেন। দু্ই ম্যাচ সিরিজ ২-০ তে জিতল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকেএকেবারে খালি হাতে দেশে ফিরে যেতে হচ্ছে। টেস্ট, ওয়ানডে ও এবার টি-টোয়েন্টিতেও হারল সফরকারীরা।
সৌম্য সরকার (২০) ও লিটন (৬০) সহজন জয় এনে দিয়েছেন। নিরুত্তাপ জয় এলো মিরপুরে। ১৫.৫ ওভারে ১ উইকেটে ১২০ রান তুলে নেয় বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টিতে ১২০ রানের টার্গেট আসলে ‘মামুলি’ হয়ে যায়। জিম্বাবুয়ে তো পেস অপশনে দুজনকে ছাড়াই বাংলাদেশে এসেছিল। ফলে লড়াইয়ের কোনো প্রশ্নই আসে না। নাইম ও লিটন ধীরস্থির শুরু করেন। প্রয়োজন ছাড়া ‘চড়াও’ হওয়ার দরকার নেই এমন ভাব করেই জয়ের পথে হেঁটেছে বাংলাদেশ। অবশ্য বাংলাদেশের দুই ওপেনার খেলাটি শেষ করে আসতে পারতেন। সেটা হলো না কারণ নাইম ৩৪ বলে ৩৩ রানে আউট হলেন সেজন্য। লিটন এই যুগের মিস্টার ফিফটি হয়ে উঠেছেন যেন। একসময় হাবিবুল বাশার এই খেতাব পেয়েছেন। অবশ্য লিটন বড় ইনিংস খেলতে পারেন। কাল লিটন আবারো হাফ সেঞ্চুরি করে প্রমাণ করেছেন, ‘আমি টি-টোয়েন্টির নতুন রাজা!’
টেলর দীর্ঘদিন পর জ্বলে উঠলেন। তবে এতে খুব একটা লাভ হলো না। অন্যকোনো ব্যাটসম্যান যেসভাবে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। টেলর ও আরভিন দ্বিতীয় উইকেটে জিম্বাবুয়েকে আশা দেখায়। তবে সেটা আর নীড় খুঁজে পায়নি। ৫৭ রানের এই জুটিই সেরা জিম্বাবুয়ের ইনিংসে। আরভিন ৩৩ বলে ২৯ রান করে আউট হন। ৪৮ বলে ৫৯ রান করে টেলর ম্যাচের শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করেছেন।
অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা বাংলাদেশের পেসার হাসান মাহমুদ আলো ছড়িয়েছেন। ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে উইকেট পাননি। তবে গতি, লাইন ও লেংথ বলে দেয় আগামীর ভবিষ্যত তিনি। বাংলাদেশ দলের দুই ভরসা মোস্তাফিজ ও আল-আমিন ২টি করে উইকেট পেয়েছেন। জিম্বাবুয়ের ইনিংসে সেভাবে বলার মত আর কোনো গল্পই নেই বলতে গেলে।
জিম্বাবুয়ে জারভিস ও চাতারার অভাব ভালভাবেই বোধ করেছে। যদিও আরভিন দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির দলে সুযোগ পেয়েছেন। তবে সেভাবে ‘আগ্রাসী’ ধরণে খেলতে পারেননি। বাংলাদেশ টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। একদম ধীরগতির ব্যাট করেছে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটা তাদের সর্বনিম্ন।
বাংলাদেশের একাদশ দেখেই চমকে যাওয়ার জোগার! সকাল থেকেই বাতাসে গুঞ্জন ছিল তামিম ইকবাল বিশ্রামে থাকবেন। সেটাই হয়েছে। সময়ের ড্যাশিং ওপেনার মোহাম্মদ নাইম শেখকে নিয়ে একাদশ গড়া হয়েছে। এ ছাড়া পেসার শফিউল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হন হাসান মাহমুদ। তামিম ও লিটন দাস কাল ওপেনিং করতে আসেন।
করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে জনজীবন যেখানে বিপর্যস্ত। সেখানে জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশের সিরিজ সুন্দরভাবেই শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড টিকেট সীমিত করেছিল। তারপরও যথেষ্ট মানুষ খেলা দেখতে এসেছেন। পৃথিবীর অন্যসব প্রান্তেই খেলা স্থগিত, কোথাও ক্লোজডোর অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ সেখানে প্রাণের সাহস দেখিয়েছে বটে।
Comment here