ইংল্যান্ড ক্রিকেট বিশ্বের নতুন রাজা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ক্রিকেটখেলাধুলা

ইংল্যান্ড ক্রিকেট বিশ্বের নতুন রাজা

নানা নাটকীয়তায় ভরা ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে শেষ পর্যন্ত জয়ী হলো ইংল্যান্ড। সুপার ওভারে গড়ানো ম্যাচও টাই হয়, কিন্তু বাউন্ডারি সংখ্যায় এগিয়ে থাকার কারণে ট্রফি ওঠে মরগ্যানদের হাতে। এর আগে তিনবার ফাইনালে ওঠে ব্যর্থ হলেও চতুর্থবার বিধাতা মুখ ফিরিয়ে নেয়নি ইংলিশদের থেকে। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে স্টোকসের বীরত্বে শেষ পর্যন্ত ট্রফি উঠে মরগ্যানদের হাতেই।

সুপার ওভারে আগে ব্যাটিং করে ইংল্যান্ড ১৫ রান করে। জস বাটলার ৭ ও স্টোকস করেন ৮ রান। বোলিং করেছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট। কিউইদের হয়ে ব্যাটিং করতে নামেন মার্টিন গাপটিল ও জেমি নিশাম। এই দুইজনেও করেন ১৫ রান। শেষ বলে দুই রান নিতে গিয়ে আউট হয়ে যান মার্টিন গাপটিল। ইংল্যান্ডের হয়ে বোলিং করেন জোফরা আর্চার।

ম্যাচ গড়াল সুপার ওভারে

লর্ডসে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ফাইনাল গড়াল সুপার ওভারে। জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের সামনে ২৪২ রানের প্রয়োজন ছিল, নির্ধারিত ওভার শেষ তারা নিউজিল্যান্ডের সমান ২৪১ রান করে।

বোল্টের করা শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। প্রথম দুই বলে ডট দেন স্টোকস। পরের বলেই ছয় মেরে ম্যাচ জমিয়ে দেন তিনি। এরপরে অতরিক্ত চারের কারণে ম্যাচ হেলে যায় ইংল্যান্ডের দিকে। শেষ বলে রান প্রয়োজন থাকলেও ইংল্যান্ড নিতে পারে এক রান। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।

লর্ডসে আগে ফিল্ডিং করে বোলারা কিউইদের কম রানে বেঁধে  অর্ধেক কাজ সেরে ফেলেছিলেন। এবার দায়িত্ব ছিল ব্যাটসম্যানদের হাতে। ৩০০ বলে মাত্র ২৪২। রান উৎসবের এই বিশ্বকাপে এটা ব্যাপার ছিল না।  কিন্তু টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের  ব্যর্থতায় মাঝে পথ থেকে ছিটকে যায় ইংলিশরা।

রান তাড়া করতে নেমে ৯০ রান না করতেই হারিয়ে ফেলে চার উইকেট। দলিয় ৫৯ থেকে ৮৬ রানে মধ্যেই ইংল্যান্ড রুট-বেয়ারস্টো-মর্গানের উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে। তবে খুব দ্রুতই স্টোকস-বাটলারের ব্যাটে ধাক্কা সামলে উঠে ইংল্যান্ড। ৫ম উইকেটে ১১০ রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে আসেন জয়ের দ্বার প্রান্তে। তবে বাটলার (৫৯) আউট হয়ে গেলে কিছুতা বিপদে পড়ে ইংলিশরা। এরপর ওকস মাঠে এসে দ্রুত ফিরে গিয়ে বিপদে ফেলে দেন ইংলিশদের।

দুই ওপেনার রয়-বেয়ারস্টোর ব্যাট থেকে আসে ১৭ ও ৩৬ রান করে। ফাইনালের মাহরণে সে ব্যর্থ ছিলেন জো রুট ও মরগ্যান। দুজনের কেউই দেখেননি দুই অঙ্কের মুখ।

ইতিহাস ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে

আগের তিন বিশ্বকাপের ফাইনালে (১৯৭৯, ১৯৮৭, ১৯৯২) ইংল্যান্ড রান তাড়া করতে গিয়ে কখনো জেতেনি। আজও লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে টসে হেরে ফিল্ডিং করছেন ইয়ন মরগ্যানরা। তবে তিনবারের ব্যর্থতাকে ছাপিয়ে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ইংলিশরাই, বিধাতা এবার আর মুখ ফিরিয়ে নেয়নি।

নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ২৪১

ক্রিকেটের তীর্থভূমি লর্ডসে টস জিতে আগে ব্যাট করে বেশি সুবিধা করতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। নির্ধারিত ওভার শেষে আট উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করে কিউইরা। ২৪২ রান করতে পারলে ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ট্রফি হাতে উঠবে ইংলিশদের।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ভালোই শুরু করছিল নিউজিল্যান্ড। পুরো বিশ্বকাপে নিজের ছায়া হয়ে পড়ে থাকা গাপটিল খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছিলেন পুরোনো মূর্তিতে। কিন্তু পারেননি বহুদূর যেতে। ওকসের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে থমকে গেছেন ১৯ রানেই। তাকে দিয়েই কিউইদের পতন শুরু হয়। এরপর বারবরের ম্যাচ গুলোর মতো সঙ্গে হ্যানরি নিকোলসকে নিয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন । অধিনায়ক কেন ৩০ রানে ফিরে গেলেও নিকোলস আউট হন ৫৫ রান করে। এটাই দলের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ।

এ ছাড়া টম লাথাম ৪৭ রান করে দলকে এনে দেন সম্মানজনক সংগ্রহ। জেমি নিশাম ১৯ ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম আউট হন ১৬ রান করে। ইংলিশদের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট নেন জোফরা আর্চার ও ক্রিস ওকস। দুজনেই নেন তিনটি করে উইকেট।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই শুরু, ফিল্ডিংয়ে ইংল্যান্ড

চলতি বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও গত আসরের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচে টস হেরে ফিল্ডিং করছেন ইয়ন মরগ্যানরা।

চলতি বিশ্বকাপে লর্ডসে হওয়া সবগুলো ম্যাচেই আগে ব্যাট করা দল কখনো হারেনি। তাই টস জিতে ব্যাট করার সুযোগ হাতছাড়া করেননি নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। আজ রোববার বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় ম্যাচটি শুরু হয়।

নিউজিল্যান্ড একাদশ: মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, টম লাথাম, জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্রান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, ম্যাট হেনরি, ট্রেন্ট বোল্ট, লকি ফার্গুসন।

ইংল্যান্ড একাদশ: জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, ইয়ন মরগান, বেন স্টোকস, জস বাটলার, ক্রিস ওকস, লিয়াম প্লাঙ্কেট, আদিল রশিদ, জফরা আর্চার, মার্ক উড।

Comment here