বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হোস্টেলে এ কেমন লকডাউন! - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ঢাকাসমগ্র বাংলা

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হোস্টেলে এ কেমন লকডাউন!

জনি রায়হান : ঢাকা মেডিকেলের এক চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের ডক্টরস হোস্টেল লকডাউন ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে সেই হোস্টেলে থাকা অন্য সব চিকিৎসকদের হোস্টেল থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন ওই হোস্টেল থাকা প্রায় অর্ধশত চিকিৎসকরা। বিপদে পড়েছেন সেখানে থাকা বিভিন্ন হাসপাতালে দায়িত্ব পালনরত চিকিৎসকরাও।

তাদের দাবি, যেহেতু বিএসএমএমইউয়ের হোস্টেলে থাকা একজন চিকিৎসকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাই ওই হোস্টেলে থাকা অন্য চিকিৎসকরাও ঝুঁকিতে রয়েছেন। এ অবস্থায় যদি কোনো চিকিৎসক হোস্টেল ছেড়ে নিজের পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরে যান তাহলে তারাও করোনার ঝুঁকিতে পড়বেন।

অবশ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় মিলছে না। কারণ একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কাজেই অন্যরাও ঝুঁকিতে রয়েছেন। কিন্তু তারা সবাই একই ডাইনিং রুমে খাওয়া দাওয়াসহ চলাফেরা করেছেন যা আরও বেশি বিপদজনক।

ওই হোস্টেলে অবস্থান করা ডা. তুষার নামের এক চিকিৎসক দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলের ওই চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় আমরা সকলেই চিন্তিত। তাই আমাদের হোস্টেলটি লকডাউনের সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউন মানে কেউ এখান থেকে বাইরে যাবে না বা বাইরের কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। কিন্তু এ কেমন অদ্ভুত লকডাউন। লকডাউন ঘোষণা করে আবার হোস্টেল থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। আমরা যদি এখন এই হোস্টেল ছেড়ে বাইরে যাই সেটা সকলের জন্যই বিপদজনক।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক চিকিৎসক বলেন, ‌আমরা এখানে এখন ৫০ জনের মতো চিকিৎসক রয়েছি। আমরা কেউ করোনা আক্রান্ত কি না তা নিশ্চিত না হয়ে বাইরে যাওয়া তো বিপদজনক।’

লকডাউনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিএসএমএমইউ-এর হলো প্রভোস্ট অধ্যাপক আলী আসগর মোড়ল নোটিশটি দিয়েছেন।

ওই অদ্ভুত নোটিশে বলা হয়েছে,‌ ‌‌‘কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে হোস্টেল আগামী ৪ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হলো। এ ব্লকে অবস্থিত হোস্টেলে যে সকল চিকিৎসক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা অবস্থান করছেন, তাদেরকে অবিলম্বে হোস্টেল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হলো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ-এর হল প্রভোস্ট অধ্যাপক আলী আসগর মোড়ল দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘একজন চিকিৎসকের করোনা শনাক্ত হওয়ায় হোস্টেল লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। বাইরের কেউ ভেতরে আসতে পারবেন না।’

হোস্টেলে বর্তমানে অবস্থান করা চিকিৎসক এবং অন্যদের হোস্টেল থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে কিছু করারও তো নেই। তারা এতগুলো মানুষ একসঙ্গে ডাইনিংয়ে খাওয়া দাওয়াসহ চলাফেরা করেন। এতেও তো অন্যদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। তারা বাইরে গেলেও সমস্যা এটাও সত্য। আজকের মধ্যে যারা যেতে চায় চলে যাবে। আর অন্যরা থাকলে থাকবেন।’

তবে ওই চিকিৎসক যে রুমে থাকতেন তার আশেপাশের রুমের কয়েকজনকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান বিএসএমএমইউ-এর হল প্রভোস্ট।

Comment here