শোধ করতে হবে জাতির পিতার রক্তের ঋণ : প্রধানমন্ত্রী - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
জাতীয়

শোধ করতে হবে জাতির পিতার রক্তের ঋণ : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং জতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী সকলকে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ আয়োজিত রক্তদান ও ব্ক্ষৃরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধনের পর এ আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর্তমানবতার সেবা করা; মানুষ্যের জন্য আত্মত্যাগ করা প্রতিটি মানুষের কর্তব্য। ‘মহৎ অর্জনের জন্য মহৎ ত্যাগের প্রয়োজন’- এটা জাতির পিতা বলে গিয়েছেন। তিনি দেশের মানুষের জন্য রক্ত দিয়ে গেছেন। জাতির পিতার এই রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে। মহান নেতার রক্ত কখনো বৃথা যেতে পারে না। ’

আজ বৃহস্পতিবার আগস্টের প্রথম দিন। ১৯৭৫ এর আগস্টের ১৫ তারিখ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। সেই থেকে এই মাসটিকে ‘শোকের মাস’ হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। এ উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি থাকে দলটির বিভিন্ন সংগঠনের।রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

প্রধান অতিথি হিসেবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীরই কর্মসূচিটির উদ্বোধনের কথা ছিল। কিন্তু ওবায়দুল কাদের সেটা না করে টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রায় ৯ মিনিট বক্তব্য রাখেন এবং কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম এবং কৃষক লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

আজ লন্ডন থেকে টেলিফোনে কৃষক লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘এই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গাছগুলো জাতির পিতা নিজ হাতে লাগিয়েছিলেন। এই যে প্রকৃতির প্রতি প্রেম ভালবাসা, মানুষের প্রতি ভালবাসা এটা সবসময় তার ছিল। আমাদের বাংলাদেশটাকে রক্ষা করতে হবে জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে। বাংলাদেশ একটা ব-দ্বীপ হওয়ায় আমরা প্রাকৃতিক দূর্যোগের মুখোমুখি হই। এই দূর্যোগ থেকে বাঁচার জন্য আমাদের বাংলাদেশে আরও ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপন করা প্রয়োজন। ’

বৃক্ষরোপনের অর্থনৈতিক লাভের বিষয়টিও তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই সাথে এটা অর্থকরীও বটে। কারণ, একেকটা বৃক্ষ থেকে ফলমূল বিক্রি করে এবং কাঠ বিক্রি করে লাভবান হতে পারে একেকটা পরিবার। ’

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, “আমাদের কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা প্রতি বছরই বৃক্ষরোপন অভিযান করে থাকেন। সেই ১৯৮৪-৮৫ সাল থেকে আমরা এটা নিয়মিত করে যাচ্ছি। এজন্য আমি কৃষক লীগকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আরেকটা বিষয় মনে রাখতে হবে, জাতির পিতা রক্ত দিয়ে গেছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘প্রয়োজনে তিনি রক্ত দেবেন। ’ঠিকই রক্ত দিয়ে গেছেন। তার সেই রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে। ”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর ১৫ আগস্ট রক্তদান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। রক্ত মানুষের জীবন বাঁচাতে সহযোগিতা করে। রক্ত দিলে রক্ত কমে না, রক্ত বাড়ে। একটা মানুষের জীবন রক্ষা পায়। জীবন রক্ষার জন্য ত্যাগ স্বীকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটা মানুষকে এটা করা উচিত। ’

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপের বিষয়ে লন্ডনে চোখের চিকিৎসারত প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইদানীং আমাদের দেশে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেমন ডেঙ্গুর প্রভাব। এই ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য আমি ইতোমধ্যে কিছু নির্দেশনা দিয়েছি। আমি মনে করি আমাদের পার্টির প্রত্যেকটা মানুষ নির্দেশনা মেনে, মশার বংশবিস্তার যাতে না হতে পারে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিবে। এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখা, পরিবারকে সুরক্ষিত রাখা, নিজের ঘরবাড়ি সবকিছু যাতে সুরক্ষিত করা হয় সেইভাবেই আমি সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি। ’

প্রধানমন্ত্রী এসময় কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করে বলেন, ‘ব্যাপকভাবে আরও রক্তদান কর্মসূচি হোক, ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপন করেন আপনারা। অন্ততপক্ষে তিনটা করে বৃক্ষরোপন করবেন সকলে। একটা বনজ, একটা ফলজ একটা ঔষধি। যতো বেশি পারেন গাছ লাগান। আমি খুব শিগগিরই দেশে ফিরে আসবো। ’

কর্মসূচিটি উদ্বোধন করায় প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানাকে এ সময় ধন্যবাদ জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে কৃষক লীগের ২০০ নেতাকর্মী রক্তদান করবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। এই রক্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হবে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

Comment here